সুন্দরবনে এই প্রথম বাঘের গলায় পরানো হল রেডিয়ো স্যাটেলাইট কলার। রবিবার কলার পরানো বাঘটিকে বনে ছেড়ে দেন বন দফতরের আধিকারিকরা।
বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপের প্রায় ১০০ রয়্যাল বেঙ্গল বাঘের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে এবং মানুষ বনাম বাঘ সংঘাতের সমাধানসূত্রের খোঁজে স্যাটেলাইট ও রেডিয়ো সংকেতের সাহায্য নিচ্ছেন বনকর্মী ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা।
রবিবার রেডিয়ো স্যাটেলাইট কলার পরিয়ে বাঘটিকে ছাড়া হয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের অন্তর্গত বসিরহাট রেঞ্জে লোকালয়ের কাছাকাছি জঙ্গলে। এই অঞ্চলে মানুের বসতি ও জঙ্গলের মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টি করেছে নদী। এই কারণে প্রায়ই বসতিতে বাঘের হানার খবর পাওয়া যায়।
ভারতে বাঘের হানায় মানুষের মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি সুন্দরবন অঞ্চলে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর লোক সভায় পেশ করা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে কমপক্ষে ৬২ জন বাঘের হামলায় মারা গিয়েছেন এই অঞ্চলে। এর পরেই তালিকায় স্থান রয়েছে মহারাষ্ট্রের, যেখানে এই চার বছরে বাঘের কবলে পড়ে ৬১জনের মৃত্যু হয়েছে।
এক বনাধিকারিকের মতে, ‘জঙ্গল সংলগ্ন গ্রামে বাঘের হানা নিয়ন্ত্রণ করতে গত কয়েক বছরে নাইলন দড়ি টাঙিয়ে সীমানা দেওয়া হয়েছে। এই ব্যবস্থায় কিছুটা ফল মেলা সত্ত্বেও গ্রামে বাঘের হানা পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। এ ছাড়া মাছ, কাঁকড়া শিকার ও মধু সংগ্রহের জন্য অরণ্যে প্রবেশ করেও বাঘের শিকার হয়েছেন অসংখ্য মানুষ।’
বনকর্মীরা জানাচ্ছেন, অতীতে বাঘ সম্পর্কে বিবিধ তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশে তাদের গলায় কলার পরানোর নিয়ম চালু ছিল। তবে এই প্রথম মানুষ বনাম বাঘ সংঘাতের সমাধান খুঁজতে কলার ব্যবহার করা হচ্ছে। তাঁদের দাবি, আর কিছু দিনের মধ্যে আরও তিনটি বাঘের গলায় রেডিয়ো স্যাটেলাইট কলার পরানোর পরিকল্পনা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য বনপাল ভি কে যাদবজানিয়েছেন, ‘সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ-এর জীব-বৈচিত্রের বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যবস্থাপনায় বরাবরই জোর দিয়েছে বন দফতর। বর্তমান প্রকল্প বাঘের বাসস্থান এবং জনসংখ্যা আর সেই সঙ্গে বাঘের আচরণ ও জীবনযাপন পদ্ধতি পর্যবেক্ষণে সহায়ক হবে।’