চোরশিকারীদের হাতে বনকর্মী খুনের ঘটনায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করল সন্দরবন কোস্টাল থানার পুলিশ। শনিবার রাতে বোট নিয়ে টহল দেওয়ার সময় খুন হন অমলেন্দু হালদার নামে এক বনকর্মী। রবিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ তাঁর উদ্ধার হয়।
তদন্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখতে রবিবারই কোস্টাল থানায় যান বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি। তিনি সাংবাদিকদের জানান। ঘটনার তদন্ত চলছে।
এই খুনের ঘটনায় বনদফতরই অভিযোগ জানিয়েছে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। দেহ সোমবার ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে।
এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। ঘটনার সময় যে সমস্ত বনকর্মীরা অমলেন্দু হালদারের সঙ্গে ছিলেন তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন। মাথায় ‘কুডুলের কোপ’, সুন্দরবনে চোরা শিকারিদের হাতে খুন বনকর্মী
টহল দেওয়ার সময় হামলা
শনিবার গভীর রাতে বোট নিয়ে টহল দিচ্ছিলেন অমলেন্দু এবং তার সহকর্মীরা। সেই সময় হরিণ শিকারিদের মুখোমুখি হন তাঁরা। বনকর্মীদের দেখেই গুলি চালাতে শুরু করে চোরা শিকারিরা। ধারাল অস্ত্র নিয়েও তারা হামলা চালায়। সেই হামলা মৃত্যু হয় বনকর্মী অমলেন্দু হালদারের। ধারাল অস্ত্র দিয়েই তাঁকে কোপানো হয় বলে অভিযোগ। তাঁর মাথায় কুড়ুলের গভীর ক্ষত চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানা গিয়েছে, অমলেন্দু হালদারের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘিতে। শনিবার রাতে তিনি বোটে করে পেট্রোলিংয়ে বেরিয়ে ছিলেন। সেই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন তিনজন বনকর্মী ও বোটের দুই কর্মী। । সুন্দরবনের বিদ্যা রেঞ্জ অফিসের অধীনে নেতাধোপানি ক্যাম্প এলাকার জঙ্গলে হরিণশিকারিদের মুখোমুখি পড়ে যান তাঁরা।
দু'পক্ষের মধ্যেই গুলির লড়াই শুরু হয়। চোরাশিকারিরা কুড়ুল নিয়েও হামলা চালায়। অমলেন্দু হালদারের মাথার পিছনে কুড়ুুল দিয়ে আঘাত করা হয়।
আরও পড়ুন। হোটেল থেকে AC-র রিমোট, চাবি চুরির চেষ্টা, বাধা দেওয়ায় তারাপীঠে আক্রান্ত মালিক
এই প্রথম বনকর্মীর মৃত্যু
সুন্দরবনের ইতিহাসে এর আগে অনেকবার চোরাশিকারিদের সঙ্গে বনকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। তবে এই প্রথমবার তাদের হামলায় এক বনকর্মীর মৃত্যু হল। গোটা বিষয়টি নাড়াচাড়া ফেলেছে প্রশাসনে। উঠছে নানা প্রশ্ন। বনকর্মীদের হাতে কি পর্যাপ্ত অস্ত্র ছিল না? তাঁরা কি যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে যাননি ?
পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত প্রক্রিয়ায় নজর রাখছেন খোদ বারুইপুর জেলার পুলিশ সুপার পালশচন্দ্র ঢালি।
আরও পড়ুন। বেআইনি নির্মাণ কীভাবে রুখতে হবে? সব পুরসভাকে পুস্তিকা পাঠাল পুর দফতর