কেতুগ্রামে পরপর দুদিনের মধ্যে ১০টি হনুমানের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। সেই ঘটনায় প্রথম থেকে গ্রামবাসীদের সন্দেহ ছিল বিষাক্ত কিছু খাওয়ার ফলে হনুমানগুলির মৃত্যু হয়েছে। এবার এই ঘটনা বিপাকে পড়লেন স্থানীয় তৃণমূল উপ প্রধানের দাদা। তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করল বন দফতর। অভিযোগ, তৃণমূল উপ প্রধানের দাদা জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করেছিলেন। আর সেই কীটনাশক মিশ্রিত ফসল খাওয়ার ফলেই একে একে ১০টি হনুমানের মৃত্যু হয়েছে। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: কেতুগ্রামে একের পর এক উদ্ধার হনুমানের দেহ! ২দিনে মৃত্যু ১০টির, তদন্তের দাবি
ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বিষক্রিয়ার কারণে হনুমানগুলির মৃত্যু হয়েছে। তার পরেই এমন পদক্ষেপ বন দফতরের। এ প্রসঙ্গে কাটোয়া মহকুমা বন দফতরের রেঞ্জার শিবপ্রসাদ সিনহা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির নাম সাগর দাস। তার বিরুদ্ধে কেতুগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, নিজের সর্ষের জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করেছিলেন ওই ব্যক্তি। সেগুলি খাওয়ার পরেই বিষক্রিয়ায় একে এক মারা যায় হনুমানগুলি। দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন হনুমানগুলিকে ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমানে পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর বিষয়ে আরও স্পষ্ট হওয়া যাবে। মৃত হনুমানগুলির মধ্যে ৫ টি পূর্ণবয়স্ক এবং বাকিগুলি অল্প বয়সি বলে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, সাগর দাস নামে ওই ব্যক্তি আবার ফেরিঘাটের মালিক। কাটোয়া শাখায় তিনি ফেরিঘাট লিজ নিয়েছেন। থানায় অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি তদন্তের জন্য তাঁকে কাটোয়া ডেকে পাঠিয়েছে বন দফতর। এদিকে, ওই ব্যক্তি জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করার কথা স্বীকার করেছেন। একইসঙ্গে দাবি করেছেন, যে হনুমান মারার উদ্দেশ্যে তিনি কীটনাশক প্রয়োগ করেননি। পোকামাকড়ের হাত থেকে ফসল বাঁচাতে প্রতিটি কৃষক জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করে থাকেন। তিনিও কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন। তার আরও দাবি, তার জমিতে কোনও হনুমানের দেহ পাওয়া যায়নি। এক্ষেত্রেও রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন সাগর। তার দাবি তাকে রাজনৈতিকভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কেতুগ্রামের শাঁখাই, এনায়েতপুর, উদ্ধারণপুর জুড়ে হনুমানের মৃতদেহগুলি উদ্ধার হয়েছে। প্রথমে শনিবার বিকেলে কেতুগ্রামের শাঁখাই, এনায়েতপুর এবং উদ্ধারণপুর এলাকায় তিনটি হনুমান মারা যায়। রবিবার সেই এলাকাগুলিতে আরও পাঁচটি হনুমান মারা যায়। বন দফতর গিয়ে আটটি মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরে বনকর্মীরা সেখান থেকে চলে গেলে আরও দু’টি হনুমানের মৃতদেহ দেখতে পান এলাকাবাসীরা।