ধান খেতে ইঁদুর ধরার জন্য পাতা হয়েছিল ফাঁদ। আর সেই ফাঁদে আটকে গেল আস্ত একটি হায়না। সেখানে বন্যপ্রাণীটি দীর্ঘক্ষণ ধরে আটকে থাকার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। পরে বনকর্মীরা গিয়ে হায়নাটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর হায়নাটি সুস্থ রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়ার কংসাবতী বনাঞ্চলে। উল্লেখ্য, এই অঞ্চলে স্থানীয় চাষিদের পাতা ফাঁদে হায়না সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীরা প্রায়ই ধরা পড়ে। এই অবস্থায় ফের হায়না ধরা পড়ায় উদ্বিগ্ন পশুপ্রেমীরা। তারা এ নিয়ে কৃষকদের আরও সচেতন হতে বলেছেন।
আরও পড়ুন: সাবধান! দুর্গাপুরে হায়নার হানা, আঁচড়ে-কামড়ে দিয়েছে, আক্রান্ত ১৫
জানা গিয়েছে, নৈহাটির একটি ক্লাব খেলাইচণ্ডী পাহাড়ে গিয়েছিল। সেখানেই একটি ধানখেতে তাদের চোখে পড়ে হায়নাটি। তারা কাছে গিয়ে দেখতে পায় একটি ফাঁদে আটকে রয়েছে হায়নাটি। সেখান থেকে বের হতে পারছে না। তখন তারা খবর দেয় বনবিভাগে। পরে বনবিভাগের কর্মীরা এসে বন্যপ্রাণীটিকে উদ্ধার করেন। এক বন আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রাণীটি বর্তমানে সুস্থ রয়েছে। বন্যপ্রাণীদের নিয়ে প্রায়ই এলাকায় স্থানীয়দের সচেতন করা হয়। কীভাবে সেটি ফাঁদে আটকে পড়েছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একইসঙ্গে ইঁদুর ধরার উদ্দেশ্যে ফাঁদ পাতা হচ্ছিল কি না তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, বেড়ো পাহাড়ের জঙ্গলে প্রায়শই হায়নার দেখা মেলে। স্থানীয়দের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, পাহাড়ের পশ্চিম দিকের একটি অংশে পাথর কাটার কাজ শুরু হয়েছে। তারফলে পাহাড়ের জঙ্গলে থাকা বন্যপ্রাণীরা লোকালয়ে চলে আসছে। সেই কারণে ওই হায়নাটিও সেখানে চলে আসতে পারে। আর ইঁদুর মারার ফাঁদে হায়নাটির পা আটকে যায়।
যদিও স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, এই এলাকায় হায়না সহ নেকড়ে এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণী রয়েছে। সেগুলি প্রায়ই লোকালয়ে চলে এসে হাঁস , মুরগি, ভেঁড়া সহ বিভিন্ন গৃহপালিত পশু তুলে নিয়ে যায়। যদিও মানুষের উপর হামলার ঘটনা খুব একটা ঘটে না। বাসিন্দাদের দাবি, হায়না ধরার জন্য ফাঁদ পাতা হয়নি। যদিও বন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, অতীতে এই অঞ্চলে বেশ কয়েকবার হায়না ধরার ঘটনা সামনে এসেছে। পাশাপাশি বিষ দিয়ে বন্যপ্রাণীদের মেরে ফেলা ঘটনাও সামনে এসেছে। তারপর স্থানীয়দের মধ্যে প্রচার চালানো শুরু হয়। ফলে এই ঘটনা এখন আর ঘটে না। পশুপ্রেমীদের বক্তব্য, প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে ইঁদুর ধরার জন্য এই ফাঁদ পাতা হয়েছিল। তবে যদি কেউ বন্যপ্রাণী ধরার জন্য ফাঁদ পেতে থাকে তাহলে তা ক্ষমার অযোগ্য।