মঙ্গলবার রাতে বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে ডুয়ার্সের ঐতিহ্যবাহী হলং ফরেস্ট বাংলো। গত ১৫ জুন থেকে জঙ্গল বন্ধ থাকায় এই বাংলোতে কোনও পর্যটক ছিলেন না। তা সত্ত্বেও কীভাবে আগুন লাগল এই বাংলোয়? তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই অবস্থায় এটি আদৌও কোনও দুর্ঘটনা নাকি ষড়যন্ত্র, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হল। বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা এই তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
আরও পড়ুন: পুড়ে ছাই হয়ে গেল জলদাপাড়ার হলং বনবাংলো, বিধ্বংসী আগুনে সব শেষ
জানা যাচ্ছে, এই তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন মুখ্য বনপাল, ডিএফও, ওই বাংলো এলাকার ফরেস্ট রেঞ্জার-সহ একাধিক আধিকারিক। সল্টলেকে বন দফতরে ওই কমিটি বৈঠক করার পর আগামিকাল ঘটনাস্থলে খতিয়ে দেখতে যেতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের মধ্যে থাকা এই বাংলোটিতে আগুন লাগে। তাতে বাংলোটি সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। দমকলের দুটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু কাজ হয়নি। বাংলোটি শেষ পর্যন্ত পুড়ে ছাই হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে দমকলের অনুমান, এসি মেশিন থেকে শর্ট সার্কিটের ফলে আগুন লেগেছে। তবে ১৫ জুন থেকে জঙ্গল বন্ধ থাকায় এবার বাংলোটিতে কোনও পর্যটক ছিল না। ফলে আগুন লাগার কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে মাদারিহাটের জলদাপাড়া জঙ্গলে কাঠের এই বাংলোটি নির্মাণ করা হয়েছিল। বিভিন্ন বন্য পশু-পাখি কাছ থেকে দেখতে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে এই বন বাংলোটি খুবই জনপ্রিয় ছিল। প্রায় ৬৭ বছর ধরে বহু পর্যটক জঙ্গলের নীরবতায় কিছু সময় কাটাতে এই বাংলোতে এসেছেন। বাংলো পুড়ে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে পর্যটক মহল।
বনমন্ত্রী জানিয়েছেন, অনেকেই এই ঘটনার জন্য বনকর্মীদের উপর দায় চাপাচ্ছেন। তবে এর পিছনে আসল কী কারণ, তা খতিয়ে দেখা দরকার। উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি চলছে। মঙ্গলবারও দিনভর বৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া কর্মীরা জানাচ্ছেন, যে লোডশেডিং ছিল। সেক্ষেত্রে শর্ট সার্কিট হয়েছিল কিনা, বৃষ্টির মধ্যেও কীভাবে গোটা বাংলো পুড়ে ছাই হয়ে গেল, তাই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। তাই এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।