আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান, আলোড়ন

এই প্রাক্তন মহিলা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে।

নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান আরতি সরকার

আজ উত্তরবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমেই তিনি যাবেন মালদহে। আর এখানেই দলের সদস্যরা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন মহিলা পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। এমনকী পরিস্থিতিতে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, মালদহের মানিকচক থানার নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান আরতি সরকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই প্রাক্তন মহিলা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। আবার এই পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক মিলন ঘোষের বিরুদ্ধেও জারি হয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা।

ঠিক কী ঘটেছে মালদহে?‌ তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কযেকজন সদস্যদের অভিযোগ, ২০১৮ সালে নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন আরতি সরকার। তিনি সিপিআইএমের টিকিটে জিতলেও দলবদল করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁকে করা হয়েছিল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। আর তাঁর বিরুদ্ধেই ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের ৯ সদস্য আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। তাঁদের অভিযোগ, বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেছেন আরতি। প্রথমে এই অভিযোগ নিয়ে তাঁরা মানিকচকের বিডিও’‌র কাছে জানান। তারপর তথ্য জানার অধিকার আইনে অভিযোগ দায়ের করেন। কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়। তার ভিত্তিতেই এখানের তৎকালীন জেলাশাসক কৌশিক মুখোপাধ্যায়কে তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।

ঠিক কী উঠে আসে তদন্তে?‌ তদন্ত করতেই কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে পড়ে। আর্থিক দুর্নীতি সামনে আসে। সেই তদন্তে উঠে আসে ২৬ লক্ষ ৬৮ হাজার ২২৫ টাকা আত্মসাৎ করেছেন আরতি। এই অর্থের কাজ সংক্রান্ত নথিও আরতি এবং মিলন দেখাতে পারেননি বলেই অভিযোগ। তাই আরতি এবং মিলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন মানিকচকের তৎকালীন বিডিও সুরজিৎ পণ্ডিত। যা জানতে পেরে গা–ঢাকা দেন আরতি। আদালতে পাল্টা আবেদনও করেন আরতি। এমনকী সেখানে ঠিক হয়, বেআইনি পথে হস্তগত করা টাকা ফেরত দেবেন আরতি। তাতে খানিকটা মীমাংশা হয়। কিন্তু সেই টাকা সরকারি তহবিলে জমা দেওয়া হয়নি। তখন আদালতের নির্দেশে আবার আরতি–মিলনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। শনিবার রাতে আরতিকে গ্রেফতার করে মানিকচক থানার পুলিশ।

এই বিষয়ে পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য লিয়াকত খান বলেন, ‘শুধু ২৬ লক্ষ টাকা নয়। এক কোটিরও বেশি টাকা নয়ছয় করেছেন আরতি।’ এই ঘটনা সামনে আসতেই তা প্রচারে নিয়ে আসতে চলেছেন বিজেপি এবং সিপিআইএম। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আইন আইনের পথে চলবে বলেই স্বচ্ছতা তুলে ধরা হচ্ছে। এত টাকা এখন ফেরত পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।