আজ, শনিবার অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদন করেছিলেন তাঁর আইনজীবী। কিন্তু তা খারিজ করে দিল বিশেষ সিবিআই আদালত। সিবিআইয়ের দাবিই এখানে মান্যতা পেল। সিবিআই চারদিনের হেফাজত দাবি করেছিল। সেই দাবি মেনে নিয়ে আরও চারদিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিল আসানসোলের বিশেষ আদালত। সিবিআই আদালতে চারদিনের জন্য হেফাজত চেয়ে আবেদন করে জানান, ‘তদন্তে অসহযোগিতা করছেন অনুব্রত মণ্ডল। তাই তাঁকে আরও জেরা করার প্রয়োজন আছে।’
সওয়াল–জবাবে কী উঠে এল? এদিন সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা অনুব্রতর নয়তো ওঁর মেয়ের কিংবা ওঁর পরিচিতের অ্যাকাউন্ট থেকে এদিক–ওদিক হয়েছে। প্রত্যেকটা প্রমাণ হাতে আসার পর ওঁকে কথা বলার অনেক সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ওঁকে বারবার ডাকা হয়েছে। কিন্তু বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন অনুব্রত মণ্ডল। উনি প্রভাবশালী। ওঁর সঙ্গে রাজ্য সরকারের যোগসূত্র রয়েছে। ভুয়ো প্রেসক্রিপশন লিখতে চিকিৎসকদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। ওঁর দেহরক্ষী এই পাচার চক্রের মধ্যস্থতাকারী। এটা কোনও একার ব্যবসা নয়। এটা একটা চক্র।’
পাল্টা কী বললেন অনুব্রতের আইনজীবী? সরাসরি সিবিআইয়ের বক্তব্যের বিরোধিতা করে অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীপ জবাব, ‘বাড়িতে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা জানানো হয়েছিল। তখন কোনও জবাব দেয়নি সিবিআই। পরের দিন আবার নোটিশ পাঠানো হয়। এতেই সিবিআইয়ের স্বচ্ছতা নষ্ট হয়েছে। ১৪ দিনের বিশ্রামের কথা মেডিক্যাল রিপোর্ট সহকারে দেওয়া হয়। সিবিআই কী ব্যবহার করেছে সেটা দেখা উচিত। অনুব্রত পালিয়েও যাননি, গা–ঢাকাও দেননি। উনি কখনই সিবিআইকে এড়াননি। একবার উনি সুস্থ ছিলেন, তখন নিজেই সিবিআই দফতরে গিয়েছিলেন’।
তারপর আদালতে কী হল? সিবিআইয়ের আইনজীবী জামিনের তীব্র প্রতিবাদ করে আদালতে জানান, জামিন পেলে তদন্ত প্রভাবিত করতে পারেন অনুব্রত। গরু পাচার মামলায় ধৃত এনামুল হকের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল অনুব্রতর। তারপর ১৭ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট, চালকল নিয়েও আদালতে সরব হন সিবিআই আইনজীবী। পাল্টা অনুব্রতর আইনজীবী জানান, ওই ১৭ কোটি টাকা ওঁর স্ত্রীর জীবনবিমার টাকা। আর যে চালকল নিয়ে কথা হচ্ছে সেটি ওঁর শ্বশুরের দেওয়া। এই দীর্ঘ সওয়াল–জবাব শেষে বিচারক ২৪ অগস্ট পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলকে।