বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার থামার নাম নেই। একদিন আগেও জামালপুরের শীর্ষাবাড়ি উপজেলায় কালীবাড়িতে তাণ্ডব চালায় মৌলবাদীরা। সেখানে প্রতিমা ভাঙা হয় এবং গয়না লুট করা হয় বলে অভিযোগ। এই আবহে এবার এপার বাংলার ফুরফুরা শরিফের আরও দুই পীরজাদা সরব হলেন। এর আগে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকি। এবার এই ইস্যুতে মুখ খুললেন পীরজাদা নাজমুস সায়াদত সিদ্দিকি এবং পীরজাদা সাফেরি সিদ্দিকি। (আরও পড়ুন: ভারতে চিকিৎসা করাতে এসে মৃত্যু ২৭ বছর বয়সি বাংলাদেশি তরুণের, দেহ গেল ময়নাতদন্তে)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ দখলের ছক কষা হচ্ছে? বিস্ফোরক ওপার বাংলা, ইসকন নিয়ে গুরুতর অভিযোগ
এই নিয়ে টিভি৯ বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পীরজাদা নাজমুস সায়াদত সিদ্দিকি বলেন, 'বাংলাদেশে যা হচ্ছে, সেখানকার কিছু মানুষ যে ভাষা ব্যবহার করছে, হিন্দু ভাই বোনদের উপর যেভাবে অত্যাচার চালাচ্ছে, তাতে ইসলাম ধর্মের মানুষের মাথা নীচু হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রকৃত মুসলমানদের বলব নিজের রক্ত দিয়ে মন্দির রক্ষা করুন। হিন্দু ভাই বোনদের রক্ষা করুন। বিশ্বের মানুষের কাছে হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ভারতের উপর কুনজর দিলে হাত, পা, কোমর ভেঙে দেব।' তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশ একটা ডোবা মাত্র। ভারতের একটা রাজ্য হুঙ্কার দিলে বাংলাদেশকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। বাংলাদেশ হচ্ছে ফাঁকা কলসী, ওরা শুধু আওয়াজ দিতেই জানে।' (আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে 'জঙ্গিদের উর্বর লীলাভূমি' আখ্যা, দিল্লিতে বসে জামাতকে তোপ শেখ হাসিনার)
আরও পড়ুন: লাউডস্পিকার বাজিয়ে নিময় ভঙ্গের অভিযোগ, সম্ভলের মসজিদের ইমামকে ২ লাখ জরিমানা
আরও পড়ুন: গলফগ্রিনে উদ্ধার কাটা মুণ্ড কাণ্ডে পুলিশের জালে ১, তবে এখনও মেলেনি বাকি দেহ
অপরদিকে পীরজাদা সাফেরি সিদ্দিকি বলেন, 'ভারতীয়দের লাথি মেরে বের করলে, আমার আঙুল চুষব না। আপনারা আমাদের দেশে আক্রমণ করতে এলে বর্ডারে গিয়ে ঢাল হয়ে দাঁড়াব।' তবে তিনি সেদেশের ছাত্র আন্দোলনকে কুর্নিশ জানান। তবে তাঁর কথায়, 'বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতারা যেভাবে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, তা মেনে নিতে পারছি না। বর্তমান সরকারের কাছে আমার অনুরোধ, দুই দেশের ভ্রাতৃত্ব যাতে নষ্ট না হয়।' (আরও পড়ুন: লাদাখের ডেপস্যাঙে কি সব প্যাট্রোলিং পয়েন্টেই টহল দিতে পারবে ভারতীয় সেনা?)
আরও পড়ুন: OpenAI-এর 'পর্দা ফাঁস' করা ভারতীয় বংশোদ্ভূতের রহস্যমৃত্যু ক্যালিফোর্নিয়ায়
আরও পড়ুন: কানাডায় খুন ৩ ভারতীয় পড়ুয়া, সতর্কতা জারি দিল্লির, খলিস্তান ইস্যুতে 'নয়া বিতর্ক'
উল্লেখ্য, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠে আসছে। হাসিনার বিদায়ের পর থেকেই মন্দির থেকে শুরু করে হিন্দুদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চলেছে। সেই সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা থেকে বিএনপি-জামাত দেখেছিল 'আওয়ামি লিগের ষড়যন্ত্র'। তবে কয়েক মাস যাওয়র পর সেই দেশে হিন্দুদের অবস্থা যেন আরও খারাপ। ধর্মের নামে চাকরি থেকে জোর করে পদত্যাগ করানো হচ্ছে সংখ্যালঘুদের। অনেককে ধর্মান্তরিত করানোর অভিযোগও উঠেছে। এরই মাঝে চট্টগ্রামে হিন্দু এবং বৌদ্ধদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সংখ্যালঘু অত্যাচারে সেখানে অভিযুক্ত খোদ সেনা। হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর গ্রেফতারি ঘিরে আরও উত্তাল হয় পরিস্থিতি। এদিকে সেখানে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বাংলাদেশের কট্টরপন্থীরা পথে নেমেছে। 'জুলাই বিল্পবের' ছাত্র নেতারাও ইসকনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। সারজিস আলম চট্টগ্রামে ইসকন এবং হিন্দুদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছেন সম্প্রতি। এই আবহে ভারতের রাস্তাতেও লোক নেমেছে। বাংলাদেশি মৌলবাদে বিরুদ্ধে স্লোগান উঠেছে এখানে। ভারত সরকারও একাধিক বিবৃতি প্রকাশ করে ওপারের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।