গঙ্গাসাগরে ২০২৪ সালে এসেছিলেন ১ কোটি পুণ্যার্থী। এবারে সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই আগাম ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। গতবছর ১ কোটি মানুষের আগমনের পরিসংখ্যান মিলেছে সরকারি নথি থেকে। এবার যে তা বাড়বে সেটা আগাম অনুমান করা হচ্ছে। গঙ্গাসাগর এখন সেজে উঠেছে। আর রাজ্য সরকার পুণ্যার্থীদের জন্য নানা ব্যবস্থা করে রেখেছে। যাতায়াত, থাকা–খাওয়া, পুণ্যস্নানের ব্যবস্থা থেকে শুরু করে নিরাপত্তা—সব ব্যবস্থাই করা হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘সাগর বন্ধু’।
কী এই ‘সাগর বন্ধু’? দেশের নানা প্রান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা গঙ্গাসাগরে আসেন। স্বাভাবিক ভাবেই গঙ্গাসাগর মেলার অন্যতম সমস্যা হল ভাষা। এখানে আক্ষরিক অর্থেই নানা ভাষা, নানা মত। এখানে আসা পুণ্যার্থীদের মধ্যে কেউ বাংলায় কথা বলেন তো কেউ হিন্দি ভাষা বোঝেন। সুতরাং এই ভাষার সমস্যা সমাধানে এবারে মেলায় এখানে আসা প্রত্যেকটি বাসে একজন করে ‘সাগর বন্ধু’ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এই ‘সাগর বন্ধু’ মূলত দোভাষীর কাজ করবে। যে যেই ভাষা বোঝেন সেই ভাষায় কথা বলে পুণ্যার্থীদের সাহায্য করবেন। কোনও পুণ্যার্থী ভাষাগত কোনও সমস্যায় পড়লে তাঁকে সহযোগিতা করবেন এই ‘সাগর বন্ধু’।
কেমন থাকছে পরিবহণ ব্যবস্থা? এবার ১৪ তারিখ ভোর থেকে ১৫ তারিখ ভোর স্নানের পবিত্র ক্ষণ। মুখ্যমন্ত্রী এবার জানান, এবার গঙ্গাসাগর মেলাকে কেন্দ্র করে ২৩০০ সরকারি বাস, ২৫০টি বেসরকারি বাস, ৯টি বার্জ, ৩২ ভেসেল, ১০০ লঞ্চ এবং ২১ জেটি তৈরি রাখা হয়েছে। পরিবহণ ব্যবস্থা—মেলার জন্য ৫,০০০ বাস (২,৩০০ সরকারি, ২৫০ বেসরকারি) থাকছে। জলপথে ৯টি বার্জ, ৩২টি ভেসেল, ১০০টি লঞ্চ এবং ২১টি জেটি থাকবে। প্রত্যেকটি পরিবহণে জিপিএস সিস্টেম সংযুক্ত করা হয়েছে। যা কাজে লাগবে।
আরও পড়ুন: কলকাতা পুরসভা এবার মালিকানাহীন জমি নিলামে তুলবে, আয় বাড়তে বড় পদক্ষেপ
নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা কেমন থাকছে? এবারও থাকছে জিপিএস, স্যাটেলাইট সিস্টেম। কয়েক হাজার পুলিশ কর্মী এবং মেলায় থাকবে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরাও। গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে বাড়তি নজরদারি। নিখোঁজ তীর্থযাত্রীদের ট্র্যাক করতে জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ১৬টি বাফার জোন এবং অতিরিক্ত নিরাপত্তা থাকছে। ওভারস্পিডিং রোধে বিশেষ নজরদারি থাকবে। সব মিলিয়ে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা থাকছে।
তথ্য ও সহায়তায় কী থাকছে? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গঙ্গাসাগর মেলার জন্য যেহেতু তীর্থকর নেওয়া হচ্ছে। তাই যাতায়াতের ক্ষেত্রে একটা টিকিট কাটলেই হবে। এখানে ‘মে আই হেল্প ইউ’ বোর্ড প্রত্যেকটি জায়গাতেই থাকবে। প্রত্যেকটি বাসে ভাষার সমস্যা সমাধানে থাকবে ‘সাগর বন্ধু’। একটি টিকিটেই যাওয়া এবং আসা দুই সুবিধা থাকছে। ৫১৫ বেডের আইসিইউ–সহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জলপথের সমস্যা মেটাতে ড্রেজিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০ ঘণ্টা চালু থাকবে লঞ্চ এবং ভেসেল। ৩,০০০ সিভিক ভলেন্টিয়ার থাকছে।