গঙ্গাসাগরে আসা পুণ্যার্থীদের ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সর্বস্ব লুঠপাট করা হচ্ছিল। কিছুতেই এই কাজ যারা করছিল তাদের ধরা যাচ্ছিল না। আসলে এই কাজ করছিল ‘লুঠপাট গ্যাং’। এই গ্যাং বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে বেড়ায় বলে আরপিএফ জানতে পেরেছে। সারা বছর যেখানে যেখানে উৎসব–পার্বণ এবং বড় কোনও ধর্মীয় কর্মকাণ্ড ঘটে সেখানে হাজির হয় এই ‘লুঠপাট গ্যাং’। মূলত এরা বিহার থেকে আসে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। এবার এই গ্যাংয়ের হদিশ পেল আরপিএফ। কারণ এরা ঘুমের ওষুধ এবং নেশার দ্রব্য মিশ্রিত জল বা পানীয় এমনকী খাবার দিয়ে যাত্রীদের সর্বস্ব লুঠ করে থাকে। তারাই এবার হাতেনাতে আরপিএফের কাছে পাকড়াও হল।
এই ‘লুঠপাট গ্যাং’য়ের সদস্যসংখ্যা অনেক। এরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে গিয়ে লুঠপাট করে থাকে। তবে সবটাই খুব সন্তর্পণে করে এরা। বাংলায় গঙ্গাসাগর মেলা শুরু হচ্ছে। তাই বাংলায় চলে এসেছিল ‘লুঠপাট গ্যাং’য়ের টিম। শুক্রবার রাতে মোকামা এক্সপ্রেসে উঠে লুঠপাট করার পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলে তারা। কিন্তু ওই ট্রেন থেকেই গ্রেফতার হয় তারা। আরপিএফ সূত্রে খবর, বিহারের বাসিন্দা শম্ভু পাসোয়ান, গোবিন্দ মাহাতো এবং মহম্মদ ইরফানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে গঙ্গাসাগরে আসার পথে পাঁচজনকে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুঠ করার অভিযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্কের লকার থেকে কয়েক কোটি টাকার গয়না হাতসাফাই, গ্রেফতার মহিলা কর্মী ও তার দাদা
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ‘লুঠপাট গ্যাং’য়ের তিনজনকে শনাক্ত করে আরপিএফ। মোকামা এক্সপ্রেস থেকে হাওড়া স্টেশন–সহ একাধিক স্টেশনে তিনজনের ছবি দিয়ে সতর্ক করা হয়। গঙ্গাসাগরের উদ্দেশে আসা মানুষদের ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সর্বস্ব লুঠপাট চালানো এই গ্যাংয়ের হদিশ পেতেই পাকড়াও করা হয় এদের। এদের জেরা করেই আরপিএফ জানতে পারে এই ‘লুঠপাট গ্যাং’য়ের কথা। এই গ্যাংয়ের কাজ কী, কোথায় যায় তারা, কেমন করে হাতসাফাই বা লুঠপাট করে, কতজন আছে এই টিমে, এদের উৎপত্তি কোথা থেকে সব জানতে পারে আরপিএফ। যা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়।
এবার এই ‘লুঠপাট গ্যাং’ বাংলায় এসেছে গঙ্গাসাগর মেলার উদ্দেশে। এখানের পুণ্যার্থী যাঁরা আসবেন তাঁদের লুঠপাট করতে পারলেই কাম তামাম। শুক্রবার থেকে গঙ্গাসাগর মেলা শুরু হয়ে গিয়েছে সরকারিভাবে। এবার প্রায় ১ কোটি পুণ্যার্থী ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সাগরদ্বীপের বাসিন্দারাও প্রস্তুত পূণ্যার্থীদের বরণ করে নিতে। সেখানে চলে এসেছে ‘লুঠপাট গ্যাং’য়ের সদস্যরা। এখন তিনজন ধরা পড়লেও বাকিরা মিশে গিয়েছে মেলায়। ভিড় ইতিমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে। আর তাতেই মিশে গিয়েছে এই ‘লুঠপাট গ্যাং’য়ের সদস্যরা। আর গোটা টিমকে ধরতেই তৎপর হয়েছে পুলিশ বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।