বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > অন্যান্য জেলা > গড়িয়াহাট জোড়া খুন কাণ্ডে আটক ২, মিঠুকে জেরা করেই হদিশ নয়া মোড়ের

গড়িয়াহাট জোড়া খুন কাণ্ডে আটক ২, মিঠুকে জেরা করেই হদিশ নয়া মোড়ের

বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুবীর চাকি

কিন্তু এখনও সে পুরো ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেননি। পুলিশ যতটা ধরতে পারছে ততটায় সায় দিচ্ছে এই মহিলা।

গড়িয়াহাট জোড়া খুন কাণ্ডে নয়া মোড়। এই ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে আটক করা হয়েছে আরও দু’‌জনকে। এরা ভিকির সঙ্গী বলেই পুলিশ মনে করছে। মূল অভিযুক্ত মিঠু হালদারকে জেরা করে কয়েকজন যুবকের নাম জানতে পারে পুলিশ। সেই সূত্রের ভিত্তিতে শুক্রবার কাকভোরে বাপি দাস ও জাহির গাজি নামে দু’জনকে পাথরপ্রতিমা থেকে আটক করা হয়। পুলিশের জালে জাহির গাজী ও বাপি মণ্ডল। ভানু মল্লিকের বাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছিল বাপি ও জাহির। এখনও পলাতক ভিকি।

পুলিশ সূত্রে খবর, জোড়া খুনের পর নাইট ডিউটি করেছিল মূল অভিযুক্ত ভিকি হালদার। সে নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে কাজ করে। এই নৃশংস খুনের মাস্টারমাইন্ড ভিকির মা মিঠু হালদার। তাকে বৃহস্পতিবার আদালতের লকআপে বসে নিশ্চিন্তভাবে চা খেতে দেখা যায়। কিন্তু এখনও সে পুরো ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেননি। পুলিশ যতটা ধরতে পারছে ততটায় সায় দিচ্ছে এই মহিলা। আলিপুর আদালত তাকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।

গত ১৮ অক্টোবর গড়িয়াহাটের বাড়ির মালিক তথা আইআইটি খড়গপুরের প্রাক্তনী সুবীর চাকি এবং তাঁর গাড়িচালক রবীন মণ্ডল কাঁকুলিয়ার বাড়িতে খুন হন। গড়িয়াহাটের এই জোড়া খুনে গ্রেফতার পরিচারিকা মিঠু হালদার। এবার আরও দু’‌জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এই খুনের পর ভিকির টি–শার্টে রক্তের দাগ লাগে। সেই রক্তমাখা টি–শার্টটি পালটে একটি ব্যাগে ভরে নেয়। পরে ওই রক্তমাখা জামাটি ধোয়ার সময় বাড়ির মালকিনের কাছে ধরা পড়ে যায় ভিকির মা মিঠু। বাড়ির মালিক পুলিশকে জানান, বিজয়া দশমীর পরের রাতে মিঠুকে রক্তমাখা জামা ধুতে দেখেছিলেন তিনি।

বাড়ির মালকিন পম্পা গায়েন পুলিশকে আরও জানান, ঘর থেকে একটি কাটারি আছে। সেটা উদ্ধার করেছে পুলিশ। রক্তমাখা জামাকাপড়ও উদ্ধার করেছে পুলিশ। এখন সেগুলি পরীক্ষা করা হচ্ছে। খুনের মোটিভও কার্যত স্পষ্ট গোয়েন্দাদের কাছে। তদন্তকারীরা ভিকি ছাড়াও ঘটনায় যুক্ত আরও তিনজনকে খুঁজছেন। এই জোড়া খুনের আগে এলাকার কোনও ব্যক্তির সঙ্গে ভিকি এবং মিঠু যোগাযোগ করেছিল কি না, পুলিশ তা জানার চেষ্টা করছে।

উল্লেখ্য, ভিকি হালদারের কাকা জানান, তাঁর দাদা সুভাষ হালদারকে ছেড়ে ডায়মন্ডহারবারে গিয়ে থাকত বউদি মিঠু। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে স্যুট–বুট পরে গাড়ি করে বাবার কাছে গিয়েছিল ভিকি। বাবা ও কাকাকে জানায়, সে মেট্রোরেলে চাকরি পেয়েছে। ইংরেজিতে কথাও বলে সে। তার আচার–ব্যবহারে অভিভূত হয়ে পড়ে পরিবারের সদস্যরা। সে বাবাকে বলে, মা তার পুরনো প্রেমিককে ভুলে গিয়েছে। ভিকি তার মা, বাবা, ভাইকে নিয়ে কলকাতায় একসঙ্গে থাকতে চায়। এমনকী বিমানে করে বেড়াতেও যেতে চায় সে। এসব শুনে ছেলেকে বিশ্বাসও করেন সুভাষবাবু। কিন্তু ডিসেম্বর মাসেই তাঁকে ডায়মন্ডহারবারের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে মুখ, হাত–পা বেঁধে খুনের চেষ্টা করে ভিকি, ভাই বিশাল এবং মা মিঠু। সেই মামলা এখনও চলছে। তার মধ্যেই এই জোড়া খুন।

বন্ধ করুন