আগেই হুমকি দিয়েছিলেন। এবার চিকিৎসকদের পালটা দংশন করা শুরু করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের এক মহিলা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রোগীকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুললেন তিনি। শুধু তাই নয়, ওই চিকিৎসক ও বেসরকারি হাসপাতালের মালিককে ফোন করে ওই রোগীর কাছ থেকে কোনও টাকা নেওয়া যাবে না বলে নিদান দিয়েছেন তিনি। উদয়নের বলে বলীয়ান হয়ে শনিবার সকালে হাসপাতালে গিয়ে অন্য এক চিকিৎসককে হুমকিও দিয়ে এসেছেন তাঁর বাহিনীর সদস্যরা।
আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে যখন প্রতিবাদে সামিল গোটা রাজ্য তখন উদয়নবাবুর একাধিক মন্তব্য বারবার শিরোনামে এসেছে। কখনও তিনি বলেছেন, ওরা একবার দংশন করলে আমাদের পাঁচবার দংশন করতে হবে। কখনও বলেছেন, শিরদাঁড়া বেঁকিয়ে দেব। আরজি কর কাণ্ডের উত্তাপ একটু স্তিমিত হতেই নিজের শহরে সেই কাজে নেমে পড়লেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্ত্রী দাবি করেন, দিনাটার এক মহিলা চিকিৎসক কোনও এক রোগীকে কানে কানে বলে তার পেটের বাচ্চার অবস্থা খুব একটা সুবিধার নয়, দ্রুত প্রসব করাতে হলে রোগীকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। আর এই কথা শোনার পর সেই রোগীর পরিবার দিনহাটার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাদের রোগীকে নিয়ে আসে এবং সেখানে ২২ হাজার টাকার বিনিময়ে রোগীর অপারেশন হয়। হাসপাতালে রোগী বেসরকারি নার্সিংহোমে ভাগিয়ে নিয়ে আসার কথা মন্ত্রীর কানে পৌঁছাতেই তিনি সেই বেসরকারি হাসপাতালে মালিককে ফোন করেন এবং যে চিকিৎসক সেই রোগীর অস্ত্র পচার করেছে তাকেও ফোন করেন। মন্ত্রী নির্দেশ দেন, রোগীর কাছ থেকে যেন একটি টাকাও নেওয়া হয়।
শুক্রবারের এই ঘটনার পরেই শনিবার দিনহাটা মহকুমা হাসপাতাল পরিদর্শনে যায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা ছাড়া উপস্থিত ছিলেন অনেকেই। আর সেখানে গিয়ে তারা হাসপাতালে চরম অবস্থায় কথা নিয়েও সরব হন। আর গোটা ঘটনা নিয়ে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতাল সুপার রঞ্জিত মণ্ডল জানান তারা যেসব অভিযোগ করেছে সেগুলির খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে এবং দ্রুত পরিষেবা আরো কিভাবে ভালো করা যায় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
প্রশ্ন উঠছে, চিকিৎসক না হয়ে উদয়নবাবু কী ভাবে জানলেন যে রোগীকে সত্যিই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা প্রয়োজন ছিল কি না? শুধুমাত্র চিকিৎসকদের শায়েস্তা করতেই কি তাঁর এই উদ্বেগ?