সরকারি ফ্রি টিকা 'সস্তা'য় নিতে বিহারে যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দারা। এই বিষয়ে হিন্দুস্তান টাইমসকে ৩০ বছর বয়সী ওয়াসিং বলেন তিনি বাংলা থেকে বিহারে দুটি কারণে টিকা নিতে এসেছে। এক তো প্রতি ডোজে বিহারে ৫০০ টাকা করে সাশ্রয়, দ্বিতীয়ত বিহারে পশ্চিমবঙ্গের মতো বিশৃঙ্খলা নেই। তবে বাংলায় সরকারি কেন্দ্র থেকে টিকা নিতে ৬০০ টাকা ব্যয় করতে হয় কি না, তা ওয়াসিমের বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল না। তিনি বলেন, 'বাংলায় আমাদের একটি টিকার ডোজ নিতে ৬০০ টাকা বা ৮০০ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হয়। তবে বিহারে সরকারি কর্মীরা মাত্র ১০০ টাকা চান।' এই ঘটনা বিহারের কাটিহারে সামনে আসে।
এই ঘটনা সামনে আসার পর বিতর্ক তৈরি হয়। কী করে বিহারের সরকারি কর্মী ফ্রি টিকা দিতে ১০০ টাকা করে নিতে পারেন, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। শুধু ওয়াসিম নন। ৩৫ বছর বয়সী মহম্মদ সাফিউদ্দিনেরও একই বক্তব্য, তিনি হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, 'আমরা নিজের রাজ্যে ৬০০ টাকার বদলে বিহারে ১০০ টাকা দিয়ে টিকা নিতে পেরে খুশি। পশ্চিমবঙ্গে টিকাকরণ নিয়ে পুরো বিশৃঙ্খলা চলছে।'
জানা গিয়েছে, বাংলা-বিহার সীমান্তে থাকা অনেক পশ্চিমবঙ্গবাসী বিহারে অবস্থিত প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিচ্ছেন। তাঁদের অনেকেরই বক্তব্য, বাংলায় নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতে হলে তাঁদের ১০ কিমি যেতে হবে। সেখানে বিহারের স্বাস্থ্যকেন্দ্র তাঁদের গ্রামের থেকে মাত্র ২ কিমি দূরে।
এই পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে যখন বাংলা থেকে বিহারে টিকা নিতে যাওয়া কয়েকজনের ভিডিয়ো করা হয় সোমবার। কাটিহার জেলার আমদাবাদ প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে ফ্রি সরকারি টিকা নিতে বাংলার বাসিন্দাদের ১০০ টাকা করে দিতে দেখা যায়। তবে তাতেও তাঁরা খুশি ছিলেন।
এদিকে গোটা সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছেন কাটিহারের জেলা প্রশাসক উদয়ন মিশ্র। তিনি এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে আমদাবাদ প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীরা টিকার বদলে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
এদিকে জানা গিয়েছে, টিকাকরণের প্রথম দিক থেকে বাংলা বিহার সীমান্তে বসবাসকারী পশ্চিমবঙ্গবাসী বিহারে গিয়ে টিকা নিচ্ছেন। তাঁদের অভিযোগ, বিহারে যেভাবে টিককাণের উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, বাংলার সরকার সেই গুরুত্ব দিচ্ছে না টিকাকরণ নিয়ে।