বান্ধবীর সঙ্গে গভীর প্রেম তরুণীর। এক কথায় যেটা হল সমকামী প্রেম। দুজনেই চেয়েছিলেন একে অপরকে বিয়ে করতে। কিন্তু, সেই সম্পর্ক মেনে নেয়নি পরিবার। একটি পাত্র ঠিক করে মেয়ের বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তারা। কিন্তু, তার আগেই চরম পদক্ষেপ করলেন তরুণী। বিয়ের তিন দিন আগেই কীটনাশিককে তিনি আত্মঘাতী হলেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তরুণীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার সময় মৃত্যু হয় তরুণীর।ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের গলসি থানা এলাকায়। ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের পর যুবককে বিয়ে, চাঁদা তুলে ভোজের আয়োজন প্রতিবেশীদের
জানা গিয়েছে, গলসির বৈঁচাগ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে তিন বছর ধরে প্রেম ছিল আত্মঘাতী তরুণীর। তবে সে বিষয়টি বেশি দিন গোপন থাকেনি। সমকামী প্রেমের কথা জানতে পেরে যায় আত্মঘাতী তরুণীর পরিবার। তবে লোক লজ্জার ভয়ে এমন সম্পর্ককে তারা মান্যতা দিতে চাননি। তাই তারা মেয়েকে পাত্রস্থ করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতো পাত্রও দেখে ফেলেন। মেয়েকে বুঝিয়ে বিয়েতে রাজি করান।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঁচাগ্রামের তরুণী তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তাই আত্মঘাতী তরুণীর সঙ্গে যাতে কোনওভাবেই তিনি যোগাযোগ করতে না পারেন তার জন্য যোগাযোগ বন্ধ করতে বলেছিল পরিবার। এমনকী আত্মঘাতী তরুণীর মোবাইলে রিচার্জও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পরে জানা যায়, বৈঁচাগ্রামের ওই তরুণী তাদের মেয়ের মোবাইল রিচার্জ করে দিতেন। এরপর আবার তাদের মধ্যে যোগাযোগ শুরু হয়। এদিকে বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার পর তিনি মানসিক চাপে পড়েন।
তারপরে মঙ্গলবার সকালে কীটনাশক খেয়ে ফেলেন তরুণী। বিষয়টি জানতে পেরে তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে প্রথম বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু, সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্রুত কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তর করার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত আর্থিক সমস্যার কারণে বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তরুণীকে ভর্তি করে পরিবার। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ। তরুণীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়। সেখানেই মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ।