কয়েক বছরের প্রেম। বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। তারপরেও প্রেমিকাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে যুবক। আর প্রেমিকা বিয়ের জন্য চাপ দিতেই ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল যুবকের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ তুলে অপমানে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করলেন তরুণী। তাঁর শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানা এলাকায়। এই ঘটনায় তরুণীর পরিবার যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। তাঁর ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, বর্তমানে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ওই তরুণী।
আরও পড়ুন: ‘প্রেমে পড়ে’ আত্মহত্যা করছেন কোটায় পড়তে আসা পড়ুয়ারা, দাবি শিক্ষামন্ত্রীর!
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবকদের নাম রাজেশ রায়। তার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলার রুজু করা হয়েছে। তবে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই যুবক পলাতক রয়েছে। জানা গিয়েছে, তরুণী শিলিগুড়ির চম্পাসারির বাসিন্দা। তাঁর সঙ্গে রাজেশের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। তরুণীর অভিযোগ, তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিবার শারীরিক সম্পর্ক করেছে ওই যুবক। কিন্তু, তারপরেও সে তাঁকে বিয়ে করেনি। এমনকী তরুণী বিয়ের কথা বললেই যুবক তাঁকে নানাভাবে অপমান করত অথবা এড়িয়ে যেত। শুধু তাই নয়, তাঁকে একবার খুনের হুমকিও দিয়েছিল যুবক। পরে আবারও তরুণী বিয়ের জন্য চাপ দিলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল করে দেয় যুবক। শুধু তাই নয়, এরপর যুবক তরুণীকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, তাঁকে পরবর্তী সময়ে বিয়ের চাপ দিলে সে ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশ্যাল মাধ্যমে এই ছবি ভাইরাল করে দেবে। শেষ পর্যন্ত মানসিক চাপ, যন্ত্রণা এবং অপমান সইতে না পেরে তরুণী গত ১৬ জানুয়ারি নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় তরুণীর বাড়িতে কেউ ছিলেন না। তবে প্রতিবেশীরা তাঁর চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ছুটে আসেন। স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তখন থেকেই তরুণীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে।
এই ঘটনায় পরে তরুণীর বাবা শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। জানা গিয়েছে, তদন্তকারীরা তরুণীর বয়ান রেকর্ড করেছেন। তাঁর বাবা জানান, তাঁর সঙ্গে যুবকের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। একথা দুপক্ষের বাড়ির লোক জানেন। কিন্তু, যুবক এখন তাঁর মেয়েকে বিয়ে করতে চাইছে না। তারজন্যই মেয়ে এমন কাণ্ড করেছে। ঘটনায় যুবকের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।