অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে প্রকাশ্যে এলেও পাহাড়ের রাশ তাঁর হাতে নেই। এখন পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে তেতে উঠেছে পাহাড়। এবার সেখানে নিজের গুরুত্ব বাড়াতে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন তিনি। একদা তাঁর জন্যই পাহাড়ে আগুন জ্বলেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এবার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে এই বৈঠক ডেকেছেন তিনি। তাতেই বোঝা যাচ্ছে, পৃথক গুরুত্ব পাহাড়ে কায়েম করতেই এই নয়া কৌশল। আর আজ, রবিবার সেটা করতে চলেছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং।
এদিকে চমকে দেওয়ার মতো দৃশ্য এই বৈঠকে দেখা যেতে চলেছে। সূত্রের খবর, এই বৈঠকে থাকবে বিজেপি। বিমল গুরুংয়ের ডাকা বৈঠকে বিজেপির উপস্থিত থাকা নিয়ে এখন শৈলশহর সরগরম। কারণ আবার নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ গড়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই কালিম্পংয়ে বৈঠক করে বিজেপির জেলা সভাপতি কল্যাণ দেওয়ান জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়ব আমরা। তবুও বিমল গুরুংয়ের ডাকা বৈঠকে যাচ্ছি আমরা।’
কারা ডাক পেল সর্বদলীয় বৈঠকে? অন্যদিকে অনীত থাপার দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা এবং তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়া মোটামুটি সবাইকে ডাকা হয়েছে। রবিবাসরীয় সর্বদলীয় বৈঠকের আমন্ত্রণ পেয়েছে বিজেপি, হামরো পার্টি, জিএনএলএফ এবং সিপিআরএম। অর্থাৎ তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী সকলকেই ডেকেছেন বিমল গুরুং। তাই তাদের আমন্ত্রণপত্র গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। দার্জিলিংয়ের জিডিএনএস প্রেক্ষাগৃহে এই সর্বদলীয় বৈঠকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা হবে। তবে সেখান থেকে কোন পথ বেরিয়ে আসে সেটাই দেখতে চাইছেন সবাই।
আর কী জানা যাচ্ছে? প্রায় ২০ বছর পর পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে চায় রাজ্য সরকার। আর সেখানে যেভাবেই হোক বিমল গুরুং তাঁর ছাপ রাখতে চাইছে। বিমল গুরুং, অজয় এডওয়ার্ড, বিনয় তামাং—সবাই এক হয়ে গিয়েছে। তার সঙ্গে যদি জিএনএলএফ এবং বিজেপিকে নিয়ে নেওয়া যায় তাহলে বিরাট চাপ তৈরি করা যাবে। এমনই মনে করেন বিমল গুরুং। যদিও এই বিষয় নিয়ে মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, ‘এখন কোনও মন্তব্য করব না।’ বিমল গুরুং নিজের অস্তিস্ব প্রমাণ করতে অনশনও করেছিলেন। কিন্তু সেটা চূড়ান্ত ফ্লপ হয়। তারপর ক্রমাগত পাহাড়ে কোণঠাসা হয়েছে বিমল। সেখান থেকে বেরিয়ে আসতেই এই সর্বদলীয় বৈঠক বলে মনে করা হচ্ছে। এই বিষয়টি নিয়ে জিএনএলএফের মুখপাত্র নীরজ জিম্বা বলেন, ‘আমাদের কাছে চিঠি এসেছে। বিমল গুরুংরা অনিত এবং তৃণমূল বিরোধী সব দলকেই ডেকেছে।’