গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন চলবে, তবে আর পাহাড়ে আগুন জ্বলবে না। ক্ষতিগ্রস্ত হবে না পাহাড়ের পর্যটন শিল্প। সেই আন্দোলন হবে দিল্লিতে। দীর্ঘদিন বাদে এক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎাকার দিতে গিয়ে এমনটাই জানালেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুং। তার দাবি সমস্যার সমাধানে তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যারা তাঁদের এই দাবি পূরণ করবেন ২০২৪-এ (লোকসভা নির্বাচনে) তাদের পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন গুরুং।
কিছুদিন আগে এক বৈঠকে গুরুং, অজয় এডওয়ার্ড, বিনয় তামাং ফের গোর্খাল্যান্ড দাবির স্বপক্ষে সুর চড়া করেছেন। তাঁরা গোর্খাল্যান্ড সংঘর্ষ সমিতি গঠন করেছেন। তবে এবারে তাঁদের আন্দোলনের অভিমুখ দিল্লি। সেই দিল্লি দরবারেই তাঁর গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন করবেন, সুর চড়া করবেন গুরুংরা। এমনটাই এই সময়কে এক সাক্ষাৎাকারে জানিয়েছেন মোর্চা নেতা।
তবে কী তাঁদের আগের আন্দোলনে ভুল ছিল। তার উত্তরে গুরুং বলেন, '২০১৭ সালে আন্দোলন ছিল ভাষার জন্য। এবার আমরা পৃথক রাজ্যের দাবিতে ময়দানে নামছি। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, গতবারের মতো পরিস্থিতি যেন না তৈরি হয়।' তার কথায়, সহিংস নয় অহিংস পথে চলবে তাঁদের আন্দোলন।
তবে এবার আন্দোলন শুধুমাত্র গোর্খাল্যান্ডের জন্যই হবে। অন্য কোনও বিকল্প নয়। গুরুং-এর কথায়, 'দার্জিলিং-গোর্খা হিল কাউন্সিল, গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান অনেক হল। এবার আমাদের পৃথক রাজ্য চাই।' এই দাবিতে কী তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন? উত্তরে তাঁরা বার্তা, 'আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমাদের অনুরোধ, দয়া করে আলোচনায় অংশ নিন।' কিন্তু পৃথক রাজ্যের দাবি কী মুখ্যমন্ত্রী মেনে নেবেন? তিনি বলেন, 'দিদি তো আগেই বলে দিয়েছেন এই ইস্যু তাঁদের আওতায় নয়। যা করার কেন্দ্রকে করতে হবে। তাই আমরা কেন্দ্রের দ্বারস্থ হব। কেন্দ্রীয় সরকারকে বাধ্য করব এই সমস্যার সমাধান করতে।'
কিন্তু পাহাড় নিয়ে বাঙালির আবেগ রয়েছে, বিজেপি কী তাঁদের দাবি মেনে নেবে। গুরুং-এর জবাব, 'গত কয়েক মাস ধরে উত্তরবঙ্গের বিজেপি নেতারা পৃথক রাজ্যের দাবিতে আওয়াজ তুলছেন। কিন্তু শীর্ষনেতৃত্ব এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে। এই ছক ওদের দীর্ঘদিনের এবার গেরুয়া শিবির ঝেড়ে কাশুক।' তিনি বলেন, 'উত্তরবঙ্গ পৃথক রাজ্য হোক, কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হোক। কেন্দ্র উত্তরবঙ্গ ভাঙতে চাইলে আমি ১১০ শতাংশ তার পাশে থাকব।'
পর্যটকদের উদ্দেশে তাঁর আশ্বাস, 'পাহাড়ে আসুন। কারও কোনও সমস্যা হবে না। আমাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন দিল্লিতে হবে। হাসি অক্ষত থাকবে পাহাড়ে।'