ঘূর্ণিঝড় আমফানের ত্রাণের টাকা স্বজনপোষণ করে যাদের পাইয়ে দেওয়া হয়েছে সেই টাকা ফেরত নেবে সরকার। সঙ্গে তৃণমূলের কেউ এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলে কড়া পদক্ষেপ করবে দল। শনিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই দাবি করলেন পশ্চিমবঙ্গের খাদ্যমন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
শনিবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাকক্ষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, 'আমফানে ক্ষতিগ্রস্তরা সবাই ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন। একজনও বাদ যাবেন না। যোগ্য নয়, এমন ব্যক্তিরা সেই টাকা পেয়ে থাকলে তা ফেরত দিতে হবে।‘
মন্ত্রীমশাই জানান, ‘তার জন্য নির্দিষ্ট ফর্ম তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সেই ফর্ম বিডিওদের কাছে পৌঁছেও দেওয়া হয়েছে। আর যাঁরা এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের কেউ সেই তালিকায় থাকলে তাঁকেও ছাড়া হবে না।'
আমফানের ত্রাণ নিয়ে গত প্রায় ১ মাস ধরে সরব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধীরা। প্রথমে অভিযোগে কর্ণপাত করেনি সরকার। এর পর আমফান বিধ্বস্ত এলাকায় প্রায় সর্বত্র বিক্ষোভ হতে থাকে। বিক্ষোভ আছড়ে পড়ে স্থানীয় তৃণমূল কার্যালয় এমনকী বিডিও অফিসেও। যদিও এই বিক্ষোভকে ‘বিজেপির ষড়যন্ত্র’ বলে আখ্যা দেয় শাসকদল।
লাগাতার বিক্ষোভে জনসমর্থন তলানিতে ঠেকছে বুঝে অবশেষে নিজেকে তৎপর দেখানোর ঘোষণা করে সরকার। ত্রাণ দুর্নীতির অভিযোগে বহিষ্কার করা হয় বেশ কয়েকজনকে। শেষ পর্যন্ত ত্রাণপ্রাপকদের তালিকা সংশোধনে পঞ্চায়েত স্তরে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয় নবান্ন। এবার মন্ত্রী জানালেন, ক্ষতিগ্রস্তরা তো ক্ষতিপূরণ পাবেনই, বরং দুর্নীতি যারা করেছে তাদেরও ছাড় নেই।
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের এই মন্তব্যকে তুমুল কটাক্ষ করেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বিজেপি সভাপতি শংকর চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের কথা আর কেউ বিশ্বাস করে না। শাস্তি হলে রেশন দুর্নীতিতে সবার আগে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকেরই শাস্তি হওয়া উচিত ছিল। নিজেদের বাঁচাতে চুনো পুঁটিদের বলির পাঁঠা বানানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল নেতৃত্ব।’