পশ্চিমবঙ্গের দরজায় কড়া নাড়ছে ২০২১–এর বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে শনিবার ৭৪তম স্বাধীনতা দিবসের দিন অহিংসার বার্তা দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এ রাজ্যে হিংসামুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি সারা দেশে নজির তৈরি করার কথা বলেছেন। রাজ্যপাল এদিন ব্যারাকপুরের গান্ধীঘাটে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান শেষে বলেন, ‘সকলের কাছে আমার অনুরোধ, চলুন আমরা পশ্চিমবঙ্গে এমন এক পরিবেশ তৈরি করি যাতে আগামী নির্বাচনগুলি নির্ভরযোগ্য, বিশ্বাসযোগ্য এবং হিংসামুক্ত হয়।
তথ্য বলছে, সাম্প্রতিককালে হানাহানি হয়নি এমন ভোট পশ্চিমবঙ্গ দেখেনি। এ রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসায় সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল ২০০৩ সালে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়। কমপক্ষে ৭৬ জন মারা গিয়েছিলেন। তার পর লোকসভা, বিধানসভা বা যে ক’টা নির্বাচন হয়েছে, মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছেই। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আসন্ন নির্বাচনেও হয়তো এই পরিস্থিতির বদল হবে না।
তবে বঙ্গে বদল চাইছে বিজেপি। সঙ্গে চাইছে বদলাও। জুন মাসে টুইট করে সে কথা জানিয়েছেনও বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। টুইটে পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্র ও দিলীপ ঘোষের ছবির পাশে লেখা, ‘বদলাও হবে, বদলও হবে।’ ২০১৯–এ লোকসভা নির্বাচনে ৪২টি আসনের মধ্যে ১২টি দখল করার পরপরই এতটা আত্মবিশ্বাসী রাজ্য বিজেপি। আগামী নির্বাচনে যে বিজেপি তৃণমূলকে এতটুকুও জমি ছাড়বে না, তা পরিষ্কার।
ও দিকে, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে শাসকদল তৃণমূলের আদায়–কাচকলায় সম্পর্ক। বারবার শাসকদলের অপারগতা তুলে ধরায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ এবং বিরক্ত তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, রাজ্যপাল আদতে বিজেপি–র মুখপাত্র। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমার মনে হয়, বিজেপি–র মুখপত্রের চেয়ে রাজ্যপাল আরও বিপজ্জনক আচরণ করছেন।’
যদিও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এদিন আশ্বাস দিয়েছেন, এবার নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে হতে যা যা করণীয় তিনি করবেন। তিনি বলেন, ‘প্রথম দিন থেকে আমি এই চেষ্টায় আছি। এবং আমি নিশ্চিত এটি হবেই। পশ্চিমবঙ্গে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হতে বাধ্য। এবং এটি পরিচালনা করা আমার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা।’ এখন সময়ই বলবে, ২০২১–এ নির্বাচন কতটা অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ হবে।