বিধানসভা নির্বাচনের আগে উত্তর মালদার রতুয়া এলাকায় ফের প্রকাশ্যে এল বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। নবগঠিত ৪ নম্বর মণ্ডল কমিটিকে কেন্দ্র করে একাংশের মধ্যেই ফুঁসে উঠল ক্ষোভ। জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারের অভিযোগ তুলে একযোগে পদত্যাগ করলেন মণ্ডলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী। পুরনো কর্মীদের দাবি, তাঁদের মতামত উপেক্ষা করে গঠন করা হয়েছে কমিটি। এর ফলে দলের নিয়ম লঙ্ঘিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিজেপি নেতাদের বেঁধে পিটিয়ে আধমরা করার হুঁশিয়ারি, বিতর্কে তৃণমূল ব্লক সভাপতি
সম্প্রতি রতুয়া ৪ নম্বর মণ্ডল কমিটির তালিকা প্রকাশের পর থেকেই অশান্তির সূত্রপাত। ক্ষুব্ধ কর্মী-নেতাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ময়দানে নেমে সংগঠনের কাজ করেও তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। জেলা সভাপতি প্রতাপ সিংহ নিজস্ব পছন্দমতো নাম ঘোষণা করেছেন, নিচুতলার মতামতকে পাত্তাই দেওয়া হয়নি। এর জেরে মণ্ডল সভাপতি শঙ্কর সরকার, সহসভাপতি নবকুমার মণ্ডল ও রবীন্দ্রনাথ সাহা সহ বহু পদাধিকারী নিজেদের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। শতাধিক কর্মীর উপস্থিতিতে তাঁরা জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন।
শঙ্কর সরকারের বক্তব্য, যে তালিকা সর্বসম্মতভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছিল, তা পুরোপুরি উপেক্ষা করেছে জেলা নেতৃত্ব। ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাই সব পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকেও জানানো হবে। সহসভাপতি নবকুমার মণ্ডল বলেন, সারাবছর ময়দানে নেমে পরিশ্রম করেন, কর্মসূচি চালান, অথচ তাঁদের মতই শোনা হচ্ছে না। সম্মান না পেলে দায়িত্বে থাকার কোনও মানে হয় না। আরেক সহসভাপতি রবীন্দ্রনাথ সাহার অভিযোগ, কমিটি গড়া হচ্ছে কারও ব্যক্তিগত স্বার্থে এটা মেনে নেওয়া যায় না।
এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা সভাপতি প্রতাপ সিংহ। তাঁর বক্তব্য, মণ্ডল কমিটি গঠন দলের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত। কিছু মতানৈক্য থাকতেই পারে, তবে বিষয়টি দলের মধ্যেই সমাধান হবে। তবে বিরোধীদের কাছে এই দ্বন্দ্ব স্বস্তির বার্তা। তৃণমূলের মালদা জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি কটাক্ষ করে বলেন, বিজেপিতে এখন নেতৃত্ব সংকট তীব্র। যারা কাজ করেন, তাঁদের মর্যাদা নেই। উন্নয়নের রাজনীতি করতে চাইলে তৃণমূলের দরজা সবসময় খোলা।