আজ পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন হল। দীর্ঘ ১০ বছর পর ফের জিটিএ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি আজ শিলিগুড়ি মহকুমার নির্বাচনও হয়েছে। নির্বাচন ঘিরে কোনওরকম অশান্তি যাতে না হয় তার জন্য কড়া নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয় পাহাড়। সেখানে কোনওরকম অশান্তি হয়নি। শান্তিপূর্ণভাবেই মিটেছে ভোট। তবে শিলিগুড়িতে বিক্ষিপ্ত অশান্তির মধ্যে হয়েছে নির্বাচন।
‘রাজ্যের সঙ্গে ঝগড়া করে কী হবে?’
অনীত থাপা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি উন্নয়নের পক্ষেই মানুষ ভোট দেবেন। ওই রাজ্যেই রয়েছি। আর এই রাজ্যের সঙ্গে ঝগড়া করে কী হবে? কোনও নেতার এত দম নেই যে রাজ্যের সঙ্গে ঝগড়া করে এলাকার উন্নয়ন করবেন? অজয়ও স্টেটের বিরোধ করছেন। বিমলও স্টেটের বিরোধ করছেন। তাদের ভোট দিলে তো ভোট নষ্ট হয়ে যাবে। কার্যত ভোটের দিনেও এভাবেই বিমল গুরুং, অজয় এডওয়ার্ডকে নিশানা করলেন অনীত থাপা।
অনীত থাপা জানিয়ে দেন, উন্নয়ন হওয়া দরকার
ভোট দিয়ে বেরিয়ে অনীত থাপা জানিয়ে দেন, উন্নয়ন হওয়া দরকার। আন্দোলনের নামে বার বার পাহাড়ের মানুষকে বিপথে চালিত করা হয়েছে। আমাদের নতুন প্রজন্ম পড়াশোনা করার পরেও চাকরি পাচ্ছেন না। পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা ঠিক নেই। সুকনার ওদিকে সব সিস্টেমে চলছে। আর সুকনা পেরোলেই সব সিস্টেম ওলটপালট! সরকার এই ব্যবস্থাটা না বুঝলে সমস্য়াটা থেকেই যাবে।
তৃণমূল-বিজেপি হাতাহাতি
তৃণমূল-বিজেপি হাতাহাতি আপার বাগডোগরা বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে আহত বিজেপির পোলিং এজেন্ট।
ভাটপাড়ায় বিক্ষোভ বামেদের
ভাটপাড়া তিন নম্বর ওয়ার্ডে সেন্ট্রাল স্কুলের বুথে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগে গার্গী চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সিপিএমের বিক্ষোভ। নির্বাচন আধিকারিক এর কাছে জমা দেওয়া হয় ডেপুটেশন।
আক্রান্ত কংগ্রেস প্রার্থী
চটেরহাট এলাকায় ডোমগড় ১৬৭ নং বুথের শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ৮ নং আসনের কংগ্রেস প্রার্থী শ্যামল কুমার মণ্ডলকে আক্রমণের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
ফের ঝামেলা ফাঁসিদেওয়ায়
ফের ঝামেলা ফাঁসিদেওয়ায়। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের চটহাটে ২৭ নম্বর বুথে গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্দল প্রার্থী তানিশ লা খালকোকে হেনস্থার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, নির্দল প্রার্থীর মোবাইল ফোন আছড়ে ভেঙে ফেলা হয়। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ঘাসফুল শিবির।
কী করছেন বিমল গুরুং
বিমল গুরুং এখন সিংমারির দলীয় কার্যালয়ে নিয়মিত আসছেন। আর সেখানে কর্মী–সমর্থকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। সামাজিক অনুষ্ঠানেও যোগ দিচ্ছেন। কিন্তু জিটিএ নির্বাচনে তিনি নেই। তবে নির্বাচনে নেই বলে খোঁজ রাখছেন না সেটা নয়। খোঁজ রাখছেন এবং লক্ষ্য করছেন এই নির্বাচনে কে কেমন ভূমিকা পালন করছে।
পাহাড়ে সমীকরণ কী দাঁড়াল?
এবার জিটিএ নির্বাচনের বিরোধিতা করে ভোটে লড়ছে না গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, জিএনএলএফ, বিজেপি, গোর্খা লিগ। ৪৫ আসনের সবকটিতে প্রার্থী দিয়েছে, দার্জিলিং পুরসভায় ক্ষমতায় আসা হামরো পার্টি। তাঁর দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ৩৫টি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে বলে দাবি করেছেন অনীত থাপা। এছাড়া তৃণমূল কংগ্রেস ১০, সিপিআইএম ১১, কংগ্রেস ৫টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
ভাটপাড়ায় ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ
ভাটপাড়ার তিন নম্বর ওয়ার্ডে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ভাটপাড়া পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআইএম প্রার্থী বাবলি দে মৃত্যুর জেরে এখানে নির্বাচন পরিস্থিতি তৈরি হয়। আজ, রবিবার তারই পরিপ্রেক্ষিতে উপ–পুরনির্বাচন। আর ভাটপাড়ার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সেন্ট্রাল স্কুলের বুথে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ‘ছাপ্পা ভোট’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
মাটিগাড়ার বুথে দেড় ঘণ্টা পরে শুরু হল ভোট
ইভিএম মেশিন খারাপ থাকায় মাটিগাড়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে শুরু হল ভোট।
ভোট দেবেন না বিমল গুরুং
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুং জানিয়ে দেন যে তিনি ভোট দিতে যাচ্ছেন না। প্রতিবাদ স্বরূপ তাঁর এই সিদ্ধান্ত। দলের অফিস থেকেই ভোটগ্রহণ পরিস্থিতির উপর নজর রাখবেন তিনি।
ভোট দিলেন অনিত থাপা
কার্শিয়াং এ ভোট দিলেন ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার অনিত থাপা। কার্শিয়াংয়ের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ২৯/৭ নম্বর বুধে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন তিনি।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নির্বাচনে অশান্তি
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নির্বাচনে অশান্তির খবর চটেরহাট এলাকায়। বহিরাগত দুষ্কৃতি নিয়ে এসে এলাকায় অশান্তি করার অভিযোগ শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। নির্দল প্রার্থীর এজেন্টকে ঢুকতে বাধা বুথে। মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
সমতলের ছয় ওয়ার্ডে ভোটযুদ্ধ
এদিকে আজ সমতলের মোট ৬টি ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এর মধ্যে দমদম পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড, দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ড, ভাটপাড়া পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড, চন্দননগর পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট হচ্ছে। তাছাড়া ঝালদার ২ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু ও পানিহাটির ৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম দত্ত খুন হওয়ায়, এই ২টি ওয়ার্ডে উপ নির্বাচন হচ্ছে।
হামরো পার্টির ক্যাম্প সরিয়ে দেয় পুলিশ
দার্জিলিঙের সেন্ট জোসেফ কলেজে বুথের কাছে হামরো পার্টির ক্যাম্প নজরে আসে পুলিশের। নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ যাতে না হয়, তার জন্য সেই ক্যাম্প সরিয়ে দেয় পুলিশ।
শিলিগুড়ি মহকুমা নির্বাচন
শিলিগুড়ির ৯ মহকুমা আসনের জন্য ৬৫৭ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ আজকে। পাশাপাশি ৪টি পঞ্চায়েত সমিতি ৬৬ আসন ও ২২টি পঞ্চায়েতের ৪৬২টি আসনে ভোট আজ। মোট ভোটার ৫ লক্ষ ২৮ হাজার। এর আগে গত পাঁচ বছর শিলিগুড়ি মহকুমা ছিল বামেদের দখলে। তবে পুরভোটে শিলিগুড়ি দখল করেছে তৃণমূল। এই আবহে গ্রামাঞ্চলেও তৃণমূল ভালো ফল করবে বলে আশা দলের।
আটক বিজেপি বিধায়কের গাড়ি
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ নির্বাচন আজ৷ আর তার ঠিক আগের রাতে শিলিগুড়ি সংলগ্ন মাটিগাড়া ব্লকের আঠারোঘাই গ্রাম পঞ্চায়েতের হালের মাথা এলাকা থেকে আটক করা হয় দার্জিলিংয়ের বিজেপি বিধায়ক নীরজ জিম্বার গাড়ি। অভিযোগ, নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করে মাটিগাড়া এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিল ওই গাড়িটি।
প্রার্থী হয়েছেন ২৭৭ জন
এবার ৪৫ আসনের জন্য প্রার্থী হয়েছেন ২৭৭ জন। এর মধ্যে ২১০ প্রার্থীই নির্দল। অনিত থাপার বিজিপিএম এবার দিয়েছে ৪৫ প্রার্থী। হামরো পার্টিও দিয়েছে ৪৫ প্রার্থী। তৃণমূলের তরফে মনোনয়ন দিয়েছেন ১০ জন। সিপিএম দিয়েছে ১২ প্রার্থী।
জিটিএ-র ৪৫ আসনে ভোট
জিটিএ-র ৪৫ আসনে ভোট নেওয়া হবে। এর জন্য আজ প্রস্তুতি তুঙ্গে। কালিম্পং, কার্শিয়াং ও দার্জিলিংয়ের ডিসিআরসি সেন্টারগুলিতে থেকে ভোটের সরঞ্জাম বিলি করা হয় গতকালই। নির্বাচন ঘিরে কোনওরকম অশান্তি যাতে না হয় তার জন্য কড়া নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে পাহাড়। মোট ৯২২টি বুথে ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোট দেবেন ৭ লাখ ৩২ হাজার ভোটদাতা। নির্বাচনের দায়িত্বে রয়েছেন ৬০ জন রিটার্নিং অফিসার৷
পাহাড়ের সমীকরণ কী দাঁড়াচ্ছে?
এখন বিনয় তামাং যোগ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসে। আর পাহাড়ের নতুন আঞ্চলিক দল হিসেবে উঠে এসেছে হামরো পার্টি। সেখানে জিটিএ নির্বাচন অবশ্যই এখানে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। জিটিএ নির্বাচনের প্রাক্কালে হামরো পার্টির নেতা অজয় এডওয়ার্ড জানান, পাহাড়ে নির্বাচনে তারা একাই লড়াই করছে। আর রোশন গিরির গলায় ভিন্ন সুর। চিঠি দিয়ে আগেই জানিয়েছিলেন তিনি, যাতে এখনই জিটিএ নির্বাচন না হয়।
কেন এখন জিটিএ নির্বাচন?
এই জিটিএ নির্বাচন করিয়ে পাহাড়ে বার্তা দিতে চায় শাসকদল। আবার পাহাড়ের পঞ্চায়েত নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ঢিলেমির অভিযোগ তুলেছে রাজ্য সরকার। পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দাবি রয়েছে অনেক দিন ধরে। জিটিএ নির্বাচনের পর গোটা রাজ্যের সঙ্গে সেই ভোট মিটিয়ে ফেলতে চাইছে রাজ্য সরকার। তাই এখন জিটিএ নির্বাচন।
কেন গুরুত্ব বাড়ছে জিটিএ নির্বাচনের?
এই নির্বাচন নিয়ে সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়েছিল। তারপর ২৬ জুন ভোট ঘোষণা করা হয়। যার বিরুদ্ধে অনশনে বসেছিলেন বিমল গুরুং। কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিল জিএনএলএফ। নির্বাচন নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্ত। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই চেয়েছিলেন পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন হোক। পাহাড়ে এখন পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের দুটি স্তর রয়েছে। সেখানে সংশোধনী এনে জেলা পরিষদ গঠন পরে করা হতে পারে।