হলদিয়ার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শ্যামল আদকের সহযোগী এবং শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর সত্যব্রত দাস গ্রেফতার। হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের ভবানীপুর থানায় হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান শ্যামল আদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল আগেই। অভিযোগ দায়ের করেছিলেন হলদিয়ার এক নির্মাণ সংস্থার মালিক অরুণাংশু মুখোপাধ্যায়। অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ এবং ঘাটাল পুরসভা এলাকার কাজে ভুয়ো নথি দেখিয়ে তাঁর সংস্থার নামে ৮৬ লক্ষ ২৯ হাজার টাকার ক্রেডেনসিয়াল তৈরি করা হয়। সেই মামলার তদন্তে নেমে ১২ সদস্যের সিট গঠন করে জেলা পুলিশ। সিটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্রদ্ধা পাণ্ডে। সিটের পক্ষ থেকে দফায় দফায় সত্যব্রত দাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর সত্যব্রত দাসকে গ্রেফতার করা হয়।
ঠিক কী ঘটেছে হলদিয়ায়? সত্যব্রত দাস ওরফে স্বপন দাস পেশায় ঠিকাদার। ২০১৭ সালে নির্বাচনে অংশ নিয়ে হলদিয়া পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড সুতাহাটার কাউন্সিলর হন। আর ২০২১ সালে হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শ্যামল আদকের হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। হলদিয়া পুরসভায় চেয়ারম্যান থাকাকালীন শ্যামল আদকের বিরুদ্ধে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তুলে থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। এই সত্যব্রত দাস হলদিয়া পুরসভার তৎকালীন টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। পাশাপাশি শ্যামল আদকের হাত ধরে তিনি শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন।
কেন গ্রেফতার করা হয়েছে সত্যব্রতকে? হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্রদ্ধা পাণ্ডে বলেন, ‘শ্যামল আদকের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় এথনও পর্যন্ত দেড় হাজার ফাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দুর্নীতি হয়েছে। অস্বচ্ছতা রয়েছে।’ পুলিশ সূত্রে খবর, শ্যামল আদক চেয়ারম্যান থাকাকালীন টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন সত্যব্রত দাস। সত্যব্রতকে ডাকা হয় হলদিয়ার ভবানীপুর থানায়। দফায় দফায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেখানে তাঁর কথায় বিস্তর অসঙ্গতি ধরা পড়ে। তখন তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই শ্যামল আদকের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছে হলদিয়া মহকুমা আদালত। পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। তিনি এখন গা–ঢাকা দিয়ে আছেন। নয়াদিল্লির এক সাংসদের বাসভবনে তিনি আছেন বলে সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে টেন্ডার দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন পুরপ্রধানের সময়ের টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান সত্যব্রত দাস, কাউন্সিলর নারায়ণচন্দ্র প্রামাণিক এবং অর্থ দফতরের দায়িত্বে থাকা বিকাশ জানাকে থানায় তলব করে পুলিশ। সত্যব্রত দাসের বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ ওঠে। সব প্রশ্নের উত্তর দেননি সত্যব্রত। তাই সত্যব্রত দাসকে গ্রেফতার করা হয়।