পুলিশ ব্যারাকেই এক এএসআই পদমর্যাদার আধিকারিকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় দানা বেঁধেছে রহস্য। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এই আকস্মিক মৃত্যু ও দেহ উদ্ধারের নেপথ্যে থাকতে পারে একটি 'রহস্যময় হোয়াট্সঅ্যাপ ভিডিয়ো কল'। ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নদিয়ার কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলায়।
প্রয়াত ওই পুলিশকর্মীর নাম দেবাশিস গড়াই। ৪২ বছরের দেবাশিস আদতে বীরভূম জেলার নানুরের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর স্ত্রী রয়েছেন ও এক মেয়েও রয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব সম্ভবত তাঁর মেয়ে এবছরই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে! তারই মাঝে ঘটে গেল এমন মর্মান্তিক ঘটনা। পুলিশের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই দেবাশিসের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তাঁকে এই অঘটনের খবর দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, মাস চারেক আগেই নদিয়ার নবদ্বীপের মায়াপুর পুলিশ ফাঁড়িতে কাজে যোগ দেন দেবাশিস। থাকতে শুরু করেন ফাঁড়িরই পুলিশ ব্যারাকে। বুধবার সকালে (১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) সেই ব্যারাকে তাঁর ঘর থেকেই দেবাশিসকে গলায় ফাঁস লাগানো এবং ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান সহকর্মীরা। কিন্তু, ততক্ষণে সব শেষ। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই ঘটনার পরই জেলা পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা ফাঁড়িতে পৌঁছন। তাঁরা হাসপাতালেও যান। তাঁরা জানিয়েছেন, এখনই এই ঘটনায় নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। সবটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়ানাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে এবং তদন্ত হলেই এই অপমৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা সম্ভব হবে।
কিন্তু, ইতিমধ্যেই বেশ কিছু সূত্র মারফত সংবাদমাধ্যমের হাতে চাঞ্চল্যকর কিছু খবর এসেছে। আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে এই সংক্রান্ত যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে একটি রহস্যময় হোয়াট্সঅ্যাপ ভিডিয়ো কলের প্রসঙ্গ উত্থাপান করা হয়েছে।
দাবি করা হচ্ছে, মঙ্গলবার রাতেই নাকি দেবাশিসের ফোনে ওই রহস্যময় কল এসেছিল। তিনি অন্তত মিনিট চারেক সেই কলে কথা বলেছিলেন। এই ঘটনার নাকি কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীও রয়েছেন। তাঁরা আদতে দেবাশিসের সহকর্মী। মঙ্গলবার রাত ১১টা ৪০ মিনিট নাগাদ দেবাশিস ওই কলে কথা বলেছিলেন বলে দাবি করা হচ্ছে। এবং যে নম্বর থেকেই সেই ভিডিয়ো কল করা হোক না কেন, সেই নম্বর নাকি দেবাশিসের মোবাইলে 'সেভড' করা ছিল না।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, তাহলে একটি ভিডিয়ো কলই কোনওভাবে এই অপমৃত্যুর জন্য দায়ী? এর উত্তর পেতে দেবাশিসের মোবাইল, তাঁর হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজ ও কল সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য পুলিশ খতিয়ে দেখছে বলে দাবি সূত্রের। এমনকী, এই ঘটনার নেপথ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, ব্ল্যাকমেলিংয়ের মতো কোনও কারণও থাকতে পারে বলে দাবি করা হচ্ছে। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত অন্তত এ নিয়ে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি।