বক্সার জঙ্গলে রাস্তায় দ্রুত গতিতে গাড়ি চলার ফলে বাঁদরের মৃত্যুর ঘটনা প্রায়ই ঘটে। শুধু তাই নয়, রাস্তায় থাকা বাঁদরকে বাঁচাতে গিয়ে অনেক সময় পথ দুর্ঘটনা ঘটে। এই পরিস্থিতিতে পথ দুর্ঘটনা রুখতে এবং বাঁদর বাঁচাতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বক্সার ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিকরা। রাজাভাতখাওয়া থেকে জয়ন্তীর রাস্তা বরাবর বেশ কয়েকটি ঝুলন্ত ব্রিজ তৈরি করল বনদফতর। আধিকারিকদের মতে, এর ফলে বাঁদরের মৃত্যু এবং পথ দুর্ঘটনা অনেক কমানো যাবে। বনদফতরের এই উদ্যোগে খুশি পশুপ্রেমীরা।
এ বিষয়ে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা বুদ্ধরাজ শেওয়া বলেন, 'জয়ন্তীর রাস্তায় বেপরোয়া গাড়ি চালানোর ফলে বহু বাঁদরের মৃত্যু হয়। সেই কারণে বাঁদর বাঁচাতে আমরা পরীক্ষামূলকভাবে কিছু ঝুলন্ত ব্রিজ বানিয়েছি। প্রাথমিকভাবে তিনটি ব্রিজ বানানো হয়েছে। তবে এই পরীক্ষা সফল হলে আগামী দিনে ব্রিজের সংখ্যা বাড়ানো হবে' বলে তিনি জানিয়েছেন।
ব্রিজগুলি বানানো হয়েছে বাঁশ, দড়ি এবং বিশেষ ধরনের তারের মাধ্যমে। রাস্তার এক পাশের উঁচু গাছ থেকে আরেক পাশের উঁচু গাছের মধ্যে এই ব্রীজগুলি বানানো হয়েছে। বনদফতরের আধিকারিকদের মতে, এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাঁদর ব্রিজের মাধ্যমে পারাপার করছে।
বনদফতরের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পশুপ্রেমীরা। তাদের বক্তব্য, বিদেশে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তায় দুর্ঘটনা এভাবে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য ব্রিজের ব্যবস্থা রয়েছে। এই অবস্থায় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে বাঁদর বাঁচাতে রাস্তার উপর ঝুলন্ত ব্রিজ বনদফতরের খুবই কার্যকরী পদক্ষেপ বলে তারা মনে করছেন। তাদের মতে, আরও বেশি সংখ্যায় এই ধরনের ব্রিজ বানানো উচিত।
প্রসঙ্গত, দমনপুর থেকে রাজাভাতখাওয়া এবং জয়ন্তি পর্যন্ত পাকা রাস্তা রয়েছে। দু'পাশে বক্সার গভীর জঙ্গল থাকায় অনেকেই দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে রাস্তা পার হয়ে যান। সেই কারণে প্রায়শই বাঁদরের মৃত্যু ঘটে। ইতিমধ্যেই গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বনদফতরের পক্ষ থেকে বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট গতির চেয়ে কোনও গাড়ি বেশি গতিতে গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।