আরজি করের ঘটনার পরেই হাসপাতালগুলিতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। তারপরেও রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কামারহাটির সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। তাতে রোগী পরিবারের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন চিকিৎসক, নার্স থেকে শুরু করে পুলিশকর্মীরা। সেই ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠেছে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে। উল্লেখযোগ্যভাবে, কিছুদিন আগেই এই হাসপাতালে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। একটি পুলিশ আউটপোস্ট তৈরি করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও এমন ঘটনায় প্রশ্নের মুখে চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তা। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এবার এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতালের নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থাকে শোকজ করল স্বাস্থ্য দফতর।
আরও পড়ুন: সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতার রোগীর ৩ আত্মীয়
হাসপাতালের মধ্যে নিরাপত্তারক্ষীরা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে একদল লোক উপরে উঠে গিয়ে হামলা চালাল? তা জানতে চাওয়া হয়েছে নিরাপত্তা সংস্থার কাছে। সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষর পার্থপ্রতিম প্রধান নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থাকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, নিরাপত্তা সংস্থার দোষকে অস্বীকার করা যায় না। গাফিলতি না থাকলে এত লোক উপরে উঠে হামলা চালাতে পারত না। একই সঙ্গে হাসপাতালে পুলিশি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, হাসপাতালে সিসিটিভি বসানো নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাদের বক্তব্য, রাজ্য সরকার দাবি করছে যে নিরাপত্তার জন্য ৪০টি অতিরিক্ত সিসিটিভি বসানো হয়েছে। তবে চিকিৎসকদের বক্তব্য, অনেক আগে এই কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। সেগুলি বসাতে অনেক বিলম্ব করেছে সরকার। যদি হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, সিসিটিভি লাগানোর ক্ষেত্রে অনেক পদ্ধতি রয়েছে। তার জন্য সময় লেগেছে। ইতিমধ্যে হাসপাতালে আগে থেকেই ছিল ২৫০টি সিসিটিভি। ৬০০ টি করা হবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এদিকে, হাসপাতালের আউটপোস্টের উদ্বোধন করা হয়েছিল গত ১০ সেপ্টেম্বর। বারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া এই সিসিটিভি উদ্বোধন করেছিলেন। এই আউটপোস্টে রয়েছেন ৪ জন অফিসার, ১৬ জন কনস্টেবল এবং ৪ জন সিভিক ভলেন্টিয়ার। এছাড়াও নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তারক্ষীরা।
এই ঘটনার পরেই কামারহাটি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শন করেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা শাসক শরৎ দ্বিবেদী। পাশাপাশি রাজ্য স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম হাসপাতালে যান। পরে পুলিশ কমিশনার অলক রাজোরিয়া হাসপাতালের নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখেন । এদিকে, ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের আদালতে তোলা হলে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।