আয়লা থেকে শুরু করে আমফান, ফণী, রেমালের মতো ঘূর্ণিঝড় গত কয়েক বছর ধরে আঘাত হানছে সুন্দরবনের উপকূলে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষজন। শুধু ঘূর্ণিঝড়ই নয়, নিম্নচাপের প্রবল বৃষ্টির কারণে নদী বাঁধ ভেঙে বন্যা কবলিত হচ্ছেন বহু মানুষ। তবে আবহাওয়ার পরিবর্তন বা দুর্যোগ চলাকালীন সুন্দরবনের প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলগুলি ঠিক কতটা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বা কী পরিস্থিতি চলছে তা সঙ্গে সঙ্গে জানা সম্ভব হচ্ছে না প্রশাসনের পক্ষে। এই অবস্থায় সুন্দরবনের উপকূলে দুর্যোগের পরিস্থিতির সরাসরি খোঁজখবর নিতে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে এবার রোরো সার্ভিস, বিরাট সুবিধা হবে পর্যটকদের, বড় গাড়িও যাবে দ্বীপে
মূলত দুর্যোগের সময় সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকাগুলির কী পরিস্থিতি অথবা আবহাওয়ার কী পরিবর্তন হচ্ছে? তা ক্যামেরাগুলির সাহায্যে ঘরে বসে দেখতে পারবেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। শুধু তাই নয় সরাসরি সেই ছবি পৌঁছে যাবে নবান্নে। এর ফলে তৎপরতার সঙ্গে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে উদ্ধারকাজে পৌঁছতে পারবে উদ্ধারকারী দল। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নদী ও সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকার বিভিন্ন অংশে ১০টি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা বসানো হবে। আধিকারিকদের মতে, এই ক্যামেরা গুলির ফলে যেমন দুর্যোগের ছবি সরাসরি পাওয়া যাবে, তেমনি কিছু ক্ষেত্রে আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া যাবে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।
কোথায় কোথায় বসানো হবে ক্যামেরা?
প্রশাসনিক সূত্রে জানা যাচ্ছে, কুলতলি, পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ, সাগর, গোসাবা, নামখানা প্রভৃতি ব্লকের কিছু দুর্গম প্রত্যন্ত এলাকায় এই ক্যামেরাগুলি বসানো হবে। মূলত সিগন্যালিং ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে ক্যামেরাগুলি বসানো হবে। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এই ক্যামেরাগুলি রোদ, বৃষ্টি অথবা বজ্রপাত থেকে সুরক্ষিত বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা। ক্যামেরাগুলি বসানোর জন্য ইতিমধ্যেই টেন্ডার ডাকা হয়েছে। দ্রুতই কাজ শুরু হবে বলে জানা যাচ্ছে।
এর আগে বিভিন্ন সময় সুন্দরবনে প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেমে এসেছে। কিন্তু, তার কোনও সঠিক তথ্য বা ছবি পাওয়া যায়নি। তবে এই ক্যামেরাগুলি সেই সমস্ত তথ্য রেকর্ড করতে সক্ষম হবে। রাজ্যের রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবেলা দফতরের উদ্যোগে এই ক্যামেরাগুলি বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসনকে ইতিমধ্যেই এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছে দফতর।