উত্তরবঙ্গের বিধ্বংসী বন্যা ও ভূমিধস শুধু ঘরবাড়ি ও চাষের জমিতে ক্ষতিই করেনি, আঘাত হেনেছে ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্নেও। অসংখ্য উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, অ্যাডমিট কার্ড-সহ গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা-সংক্রান্ত নথি ভেসে গিয়েছে জলের স্রোতে বা চাপা পড়েছে ধসের তলায়। ঠিক এই দুর্দিনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। ঘোষণা করা হয়েছে, দুর্গত অঞ্চলের পরীক্ষার্থীদের বিনামূল্যে দেওয়া হবে ডুপ্লিকেট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট ও অ্যাডমিট কার্ড।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গে বিপর্যস্ত কৃষকদের শস্য বিমা নিশ্চিত করতে হবে, নির্দেশ কৃষিমন্ত্রীর
প্রথম সেমেস্টার শেষের পর আগামী ফেব্রুয়ারিতে উচ্চমাধ্যমিকের চূড়ান্ত পরীক্ষা। এর মাঝেই উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ বিপর্যয় পরীক্ষার্থীদের মধ্যে সৃষ্টি করেছে তীব্র অনিশ্চয়তা। অনেকেই আশঙ্কায় ছিলেন নথি ছাড়া কীভাবে বসবেন পরীক্ষায়? সংসদের আশ্বাসে সেই আশঙ্কায় আপাতত স্বস্তি পেল পড়ুয়ারা। সংসদ জানিয়েছে, পড়ুয়ারা নিজেদের স্কুলের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন ডুপ্লিকেট নথির জন্য। স্কুল থেকে প্রাপ্ত আবেদনপত্রের ভিত্তিতে দ্রুত ওই সব প্রতিলিপি পৌঁছে দেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট এলাকায়। এই প্রক্রিয়ায় কোনও অতিরিক্ত ফি বা অর্থ নেওয়া হবে না এ কথা স্পষ্ট জানিয়েছেন সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বহু পড়ুয়া বিপাকে পড়েছে। তাই মানবিকতার খাতিরে বিনামূল্যে নথি প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব নথি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
তবে দুর্যোগের ধাক্কা শুধু নথির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বহু পরীক্ষার্থীর বইখাতা এবং পড়াশোনার সামগ্রীও নষ্ট হয়েছে জলে বা কাদায়। এই পরিস্থিতিতে সরকারের তরফে বই পাঠানোর উদ্যোগও শুরু হয়েছে। স্কুলগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রছাত্রীদের তালিকা তৈরি করে জেলা পরিদর্শকের মাধ্যমে সংসদে পাঠাতে। তালিকা হাতে পেলেই বই পাঠানো শুরু হবে বলে সংসদ সূত্রে জানানো হয়েছে। এদিকে সামনে মাধ্যমিক পরীক্ষাও। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, শিক্ষা দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী প্রস্তুত প্রশাসন।