উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নির্বিঘ্নে শুরু হলেও তা শান্তিপূর্ণ থাকল না। পড়ুয়াদের টুকতে না দেওয়ায় শিক্ষকদের মারধর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই ঘটনা নিয়ে রাজ্যে তুমুল শোরগোল পড়ে যায়। শিক্ষক–শিক্ষিকারা গুরুজন। সেখানে তাঁদের গায়ে হাত তুলল ছাত্ররা! এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তাই মালদায় স্কুলের শিক্ষকদের মারধরের ঘটনায় আজ, বৃহস্পতিবার ৯ অভিযুক্ত পড়ুয়াকে চিহ্নিত করল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এমনকী তাদের সকলের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। তার সঙ্গে দুই স্কুলের প্রধানশিক্ষককে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার এই কথাই জানালেন উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জিত ভট্টাচার্য।
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা এখনও চলছে। ৩ তারিখ শুরু হয়েছে। শেষ হবে ১৮ তারিখ। এই আবহে এমন কঠিন পদক্ষেপ করার জেরে চাপে পড়ে গেল ওই পড়ুয়ারা। একবছর নষ্ট হতে চলেছে তাদের। আজ উত্তর দিনাজপুরের কর্ণজোড়ার সার্কিটের বেশ কয়েকটি স্কুল পরিদর্শন করেন চিরঞ্জিত ভট্টাচার্য। আর সেখানেই সাংবাদিক সম্মেলন করে কড়া শাস্তির কথা জানিয়ে দেন তিনি। এই খবর এখন চাউর হয়ে গিয়েছে। অভিযুক্ত ওই পড়ুয়াদের সঙ্গে দুই স্কুলকেও কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে। আজ চিরঞ্জিত ভট্টাচার্য বলেন, ‘মালদার কালিয়াচক ৩ ব্লকের চামাগ্রাম হাইস্কুলে শিক্ষকদের মারধরের ঘটনায় জড়িত কামরিটোলা হাই মাদ্রাসার ৯ জন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করা হবে।’
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় প্রকল্পে পিছিয়ে ডবল ইঞ্জিন রাজ্য, এগিয়ে বাংলা, শিক্ষামন্ত্রকের রিপোর্টে প্রকাশ
এই পড়ুয়াদের শাস্তির সঙ্গে দুই স্কুলের প্রধানশিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। অন্যান্য পড়ুয়ারা পরীক্ষা দিতে পারবে। কোনও অসুবিধা হবে না বলে জানান উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি। চিরঞ্জিত ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘বাকি পরীক্ষার্থী যারা যদি দেখা যায়, তাদের মধ্যে আরও কেউ শিক্ষকদের মারধরের ঘটনায় যুক্ত সেক্ষেত্রে তাদেরও পরীক্ষা বাতিল করা হবে। আর এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পরীক্ষার শেষদিনে পড়ুয়ারা যদি পরীক্ষাকেন্দ্রে ভাঙচুর করে তাহলে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে স্কুলকে। স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ডেকে পাঠিয়ে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব তুলে দেওয়া হবে। স্কুল থেকেই ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে।’
২০২৪ সালে মালদার একটি স্কুলের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছিল। এই পরীক্ষায় বসার আগে পরীক্ষার্থীদের তল্লাশি চালানো হয়। তাদের কাছে টুকলি করার কোনও সামগ্রী আছে কিনা তা দেখা হয়। এই তল্লাশিতে অনেকেই বেশ চাপে পড়ে যায়। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা এই ঘটনায় বেশ ক্ষেপে ওঠে। টুকলিতে সরাসরি এভাবে বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় পরীক্ষার্থীদের হাতে আক্রান্ত হন বৈষ্ণবনগরের চামাগ্রাম হাইস্কুলের শিক্ষকরা। তার জেরে মোট ৬জন শিক্ষক আহত হন। এমনকী যখন এই হামলা চলছে তখন উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য ওই জেলাতেই উপস্থিত ছিলেন। তখনই তিনি কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। এবার সেটা করে দেখালেন।