বড় করে জাল ফেলা হচ্ছে। এক বুক আশা নিয়ে এই জাল ফেলছেন মৎস্যজীবীরা। কিন্তু জালে রূপোলি ফসল উঠছে কই! দিনের পর দিন এভাবেই কেটে যাচ্ছে। তাই এখন হতাশ বিপুল পরিমাণ মৎস্যজীবীরা। ভরা আষাঢ় মাসে ইলিশের দেখা মিলবে না সেটা ভাবতেই পারছেন না মৎস্যজীবীরা। শুরুতে পর পর কদিন ইলিশের দেখা মিললেও এখন তারা অধরা। এটাকেই ইলিশের মরশুম বলা হয়ে থাকে। সুতরাং ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ওঠার কথা মৎস্যজীবীদের জালে। কিন্তু সেখানে দেখা যাচ্ছে, সমুদ্রে পাড়ি দেওয়া ট্রলারগুলি অধিকাংশই খালি ফিরছে। ইলিশ না মেলায় বাড়তি কড়ি উপার্জন হচ্ছে না। উলটে ক্ষতির মুখে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা।
আষাঢ় মাস শেষ হতে আর একসপ্তাহ বাকি। তারপর পড়বে শ্রাবণ মাস। তখন ইলিশ মিলতে পারে বলে মনে করছেন মৎস্যজীবীরা। এই সমস্যা নিয়ে মৎস্য দফতরের সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমন কুমার সাহু বলেন, ‘এখন প্রজনন ঋতুতে বঙ্গের নদীতে ধেয়ে আসার কথা ইলিশ মাছের। কিন্তু সেটা নির্ভর করে নদী ও সমুদ্রের লবণের পরিমাণের উপর। নদী ও সমুদ্রে লবণের পরিমাণ যত কমবে, ততই মোহনার দিকে আসবে ইলিশ। তাছাড়া সমুদ্রে পুবালি বাতাস কম। দক্ষিণবঙ্গে তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সমুদ্রের নোনা ভাব সম্পূর্ণ কাটেনি। তবে আর একটু অপেক্ষা করতে হবে। তাহলেই ইলিশের ঝাঁক মিলবে।’
আরও পড়ুন: ‘কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে রাজ্য?’ সন্দেশখালি মামলায় রাজ্যের আবেদন খারিজ সুপ্রিম কোর্টের
মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে মৎস্যজীবীদের হতাশ হতে নিষেধ করেছে। কারণ এটা যে কারণে হচ্ছে সেই সমস্যা অচিরেই মিটে যাবে। বৃষ্টিপাত শ্রাবণ মাসে বাড়বে বলে আশা করছেন তাঁরা। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটালকে একান্ত সাক্ষাৎকারে সুমন কুমার সাহু পূর্ব মেদিনীপুর থেকে বলেন, ‘বিশ্ব উষ্ণায়ণ একটা বড় কারণ ইলিশ মাছ না পাওয়ার ক্ষেত্রে। আমরা এই বছর এখনও পর্যন্ত ভালরকম বৃষ্টি পাইনি। তাহলে ইলিশ মাছ আসবে কী করে? তবে অপেক্ষা করলে মিলবে ইলিশ। হতাশ হওয়ার দরকার নেই।’ তবে বঙ্গোপসাগর ও হুগলি নদীতে ইলিশের দেখা নেই। মরশুমের শুরুতে ইলিশ ধরা দিলেও এখন অধরা থেকে যাচ্ছে।
এছাড়া অতিরিক্ত মাছ ধরার কারণে এখানে একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে যাচ্ছে। তাই এখন মিলছে না ইলিশ বলে মৎস্য দফতর সূত্রে খবর। তবে শ্রাবণের শুরু থেকেই সাগর আর হুগলি নদীর মোহনায় আবার ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মিলবে। এই বিষয়ে কাকদ্বীপ এলাকার মৎস্যজীবী বাপি দাস বলেন, ‘ভেবেছিলাম এই বছর ইলিশ মাছ ভাল উঠবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ইলিশের তেমন দেখা নেই। তাই আমাদের অনেকটাই ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। আষাঢ় মাসে ইলিশ মেলেনি। তবে শ্রাবণ মাসে ইলিশ মিলতে পারে।’ কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতির বক্তব্য, ‘সাগরে যে ইলিশ একেবারেই নেই সেটা নয়। আসলে মাত্র ২০ দিন হল ইলিশ মাছ ধরা শুরু করেছে ট্রলারগুলি। পর্যাপ্ত বৃষ্টি নেই। বৃষ্টি হলে ভাল ইলিশ পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।’