সেই তুমি এলে, বড্ড তাড়াতাড়ি এলে। সারাবছর থাকবে তো? না, এটা কোনও প্রেমিক প্রেমিকার কথোপকথন নয়। এটা খাদ্য–খাদকের সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে বেরিয়ে আসা কথা। এখন মরশুমের প্রথম ইলিশ উঠেছে। আর তা কিনতে গৃহকর্তারা বাজারে হুমরি খেয়ে পড়েছেন। তখনই এক গৃহকর্তা হাতে ইলিশ নিয়ে বললেন, ‘সেই তুমি এলে, বড্ড তাড়াতাড়ি এলে। সারাবছর থাকবে তো?’ আসলে ভোজনরসিক বাঙালি চায় সারাবছরই পাতে পড়ুক ইলিশ। কিন্তু তা তো হয় না। বরং বর্ষা চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইলিশেরও দেখা মেলে না। আর যদিও বা মেলে সেটা তখন মহার্ঘ। ইচ্ছা থাকলেও বহু গৃহকর্তার সাধ্যে কুলায় না।
‘রুপোলি শস্য’ পাতে পড়ার অপেক্ষায় থাকেন ভোজনরসিক আমবাঙালির একাংশ। ইলিশের ঝাল, ভাপা ইলিশ, ইলিশের পাতুরি, সর্ষে ইলিশ এমনকী ইলিশের ডিম দিয়ে তরকারি জিভে জল আসার মতো খাবার। এবার মাছে ভাতে বাঙালির পাতে পড়তে চলেছে ইলিশ। মরসুমের শুরুতেই ডায়মন্ডহারবার নগেন্দ্র বাজারে ঢুকল ৩ টন ইলিশ। নাম শুনলেই বাঙালির জিভে আসে জল। দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢুকতে না ঢুকতেই ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজারে ঢুকেছে তিন হাজার কেজি ইলিশ। যা বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকা প্রতি কেজিতে। সুতরাং এবার এই মরসুমের প্রথম ইলিশ ভালভাবে পড়তে চলেছে বলে ধরে নেওয়া যায়।
আরও পড়ুন: রাজভবন–বিধানসভার চিঠি চালাচালিতে থমকে শপথগ্রহণ, দুই বিধায়কের শপথ কবে?
এদিকে টানা দু’মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকার পর ১৫ জুন গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যান মৎস্যজীবীরা। আর শুক্রবার ডায়মন্ডহারবার নগেন্দ্র বাজার মাছ আড়তে প্রায় ৩ টন ইলিশ ঢুকেছে। এমনই খবর মিলেছে নগেন্দ্রবাজার মৎস্য আড়তদার সমিতির পক্ষ থেকে। জালে যত ইলিশ পড়বে তত মধ্যবিত্তের নাগালে আসবে দাম। এখন বাজারে ১ কেজি ওজনের ইলিশের দাম ১৪০০ টাকা। আজ, শনিবার জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা উপলক্ষ্যে অনেকে বেরিয়ে পড়েছেন। আবার আগামীকাল রবিবার ছুটি রয়েছে। এই দু’দিনে দেদার বিকোবে ইলিশ মাছ। সুতরাং ডায়মন্ডহারবার থেকে বহু বাজারেই সেই মাছ আসছে।
অন্যদিকে এই আবহে খুশি মৎস্যজীবীরাও। কারণ ইলিশ মাছ বিক্রি করে বাড়তি কড়ি গুণতে পারবেন তাঁরা। এই বিষয়ে আড়তদার সমিতির সম্পাদক জগন্নাথ সরকারের বক্তব্য, ‘মরসুমের শুরুতেই জালে ভাল পরিমাণে ইলিশ দেখা দিয়েছে। পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আমি আশাবাদী। আর ইলিশগুলি সাইজে বেশ বড়। দু’মাস মাছ ধরা বন্ধ ছিল। মৎস্যজীবীরা আবার সমুদ্রে যেতে পেরেছেন। ভাল সাইজের ইলিশ ধরা পড়ছে মৎস্যজীবীদের জালে। তবে অন্যান্য বছরের থেকে এই বছর জালে ইলিশ বেশি পড়বে বলে আশাবাদী আমরা সকলেই।’