সব কাজ করে দিয়েছি। তবু লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে একটাও আসন পায়নি তৃণমূল। কী অপরাধ ছিল আমাদের? কী অন্যায় করেছিলাম আমরা?— আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলা নিয়ে মঙ্গলবারের জনসভায় এভাবেই সাধারণ মানুষ তথা ভোটারদের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে হারানো কেন্দ্রে ফের মানুষের আস্থা অর্জন করতে মরিয়া মমতা এদিন বলেন, ‘আমি উত্তরবঙ্গে লোকসভায় একটাও আসন পাইনি। কিন্তু বিধানসভায় আমি আপনাদের আশীর্বাদ, দোয়া— সবটাই চাই।’
২০১৯–এর লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে উত্তরবঙ্গে বেশ জাঁকিয়ে বসেছে গেরুয়া শিবির। অন্য জেলাগুলিতে বিজেপি–র ডালপালা যেভাবে ছড়িয়েছে তাতে অনেকটাই বেকায়দায় রাজ্যের শাসকদল। আবার গোদের ওপর বিষফোড়ার মতো রাজ্যে সক্রিয় হচ্ছে সংখ্যালঘু সংগঠন অল ইন্ডিয়া মজলিস–এ–ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম)। জানা গিয়েছে, খুব শীঘ্রই বাংলায় আসছেন মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েসি। বাংলায় নির্বাচনী রণকৌশল ঠিক করতে শনিবার হায়দরাবাদে পশ্চিমবঙ্গের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি।
এদিন সেই মিম–কেই আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের ভোট ভাগ করবার জন্য আবার হায়দরাবাদ থেকে একটা পার্টিকে ধরে এনেছে। বিজেপি টাকা দেয় আর বিজেপি–র টাকায় ওরা এটা করে। বিহারের ভোটে সেটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। বিজেপি হিন্দুদের ভোট নেবে, ও মুসলিমের ভোট নেবে। আমি কি কাঁচাকলা খাব?’ দলের প্রতি মমতার বার্তা, ‘এটা একটা রাজনীতি। এই রাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।’
বিজেপি–র বিরুদ্ধে ইতিহাস, ভূগোল বদলে দেওয়ার অভিযোগ এনে মমতা বলেন, ‘মাছের তেলে মাছ ভাজছে বিজেপি। বাইরে থেকে আরএসএসের লোকজন আসছে। এরা রামকৃষ্ণ মিশন নয়, এরা ভারত সেবাশ্রম নয়, এরা স্বামী বিবেকানন্দ নয়, এরা একটা ঘৃণ্য ধর্মের প্রচারক। ওদের উদ্দেশ্য বাংলাকে গুজরাট বানিয়ে দেওয়া। আমরা তা হতে দেব না।’
মুখ্যমন্ত্রীর আরও অভিযোগ, ‘সারা জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারে নতুন একটা ধর্ম তৈরি করেছে— দাঙ্গা ধর্ম, কুৎসা ধর্ম। স্বামী বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণের হিন্দু ধর্ম নয়, ওটা ঘৃণ্য ধর্ম। একে অন্যজনকে খুন করার রাজনীতি করছে। ধর্মে ধর্মে লড়াই লাগিয়ে দিচ্ছে।’ বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসকে ‘অঙ্কা, বঙ্কা, শঙ্কা’ বলে এদিন কটাক্ষ করেছেন মমতা।