রবিবাসরীয় দুপুরে প্রকাশ্যেই চলল গুলি। আর তার জেরে মা এবং ছেলে এখন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন পড়ে গিয়েছে হুগলি জেলায়। হাঁসের খাবারের জন্য পুকুর থেকে গুগলি তুলছিলেন এক ব্যক্তি। আর ওই গুগলি পুকুরের সামনে রাখায় সেগুলি অপরিষ্কার হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে শুরু হয় বচসা। আর সেই বচসাই চরম আকার নেয়। রাগের চোটে মা এবং ছেলেকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে দেয় এক প্রৌঢ় বলে অভিযোগ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হুগলির সাহাগঞ্জে আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। সুভদ্রা বসু এবং তাঁর ছেলে সুরজিৎ বসুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে চন্দননগর পুলিশের তদন্তকারীরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার দুপুরে হঠাৎ শোনা যায় গুলির শব্দ। তাতে অনেকের ঘুম চটকে যায়। গ্রামবাসীরা ছুটে এসে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন মা এবং ছেলে। তাঁদের গুলি করা হয়েছে। সাহাগঞ্জ ঝাঁপ পুকুর এলাকার বাসিন্দা সুরজিৎ বসু। তাঁর পোষা হাঁসের জন্য বাড়ির সামনের পুকুর থেকে গুগলি তুলে পুকুরের পাড়ে ধুচ্ছিলেন। এই কাজের জেরে পুকুরের পাড় নোংরা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন প্রতিবেশী সুনীল দেবনাথ। তা নিয়েই গালিগালাজ শুরু হয়ে যায়। সুরজিৎ ওই জায়গা ধুয়ে দেবে বললেও বচসা থামেনি। তা থেকেই চলে গুলি।
আরও পড়ুন: আইআইটি খড়গপুরে তৃতীয় বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে রহস্য, খুন না আত্মহত্যা? তদন্তে পুলিশ
এই গুলি চলার আগে তাঁদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি পর্যন্ত হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, সুরজিৎকে ধাক্কা মেরে পুকুরে ফেলে দেয় সুনীল। তখন পুকুর থেকে উঠেই সুনীলকে দেখে নেবে বলে সুরজিৎ বলে অভিযোগ। এই কথা শুনে সহ্য করতে না পেরে কাটারি নিয়ে তাড়া করে সুনীল। সুরজিতের মা শুভদ্রা বসু তখন ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী সুনীল ঘর থেকে দুনলা বন্দুক বের করে গুলি চালিয়ে দেয়। আর তাতেই গুলিবিদ্ধ হন মা ও ছেলে। রক্তাক্ত হয়ে পড়ায় প্রতিবেশীরাই হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এছাড়া স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনার পর থেকে রাস্তায় জড়ো হয়ে যান। ততক্ষণে মা এবং ছেলেকে উদ্ধার করে চুঁচুড়ার ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় বাকি প্রতিবেশীরা। এই খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় চুঁচুড়া থানার পুলিশ। আইসি, এসিপি এবং ডিডি’র নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে তদন্ত শুরু করেন। আর হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত চুঁচুড়া থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন। তবে এই সুযোগে অভিযুক্ত গা–ঢাকা দিয়েছে। তাই গ্রেফতার করা যায়নি।