বাড়ির সামনে হচ্ছিল মনসা পুজো। তাই আড়ম্বরের শেষ ছিল না। কিন্তু মনসা পুজো উপলক্ষ্যে চলছিল দেদার মাইক বাজানো। যা নিয়ে শুরু হয় বচসা। আর এই বচসার জেরে রাস্তায় ফেলে এক যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল। আর ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল আলোড়ন পড়ে গেল। হুগলির পাণ্ডুয়ার দ্বারবাসিনী এলাকা মানুষ এখন আতঙ্কিত। ইতিমধ্যেই এই পিটিয়ে খুনের ঘটনায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মৃত ব্যক্তির নাম আশিস বাউল (২৬)। এখন শুরু হয়েছে তদন্ত। ওই যুবক দ্বারবাসিনীরই গরুইগেঁড়ে গ্রামের বাসিন্দা।
এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার আশিস বন্ধুদের সঙ্গে বিষহরিতলার মেলা দেখে মোটরবাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি থেকে তখন কিছুটা দূরে গমুকপাটি এলাকায় মনসা পুজো হচ্ছিল। আর তারস্বরে মাইক বাজছিল। এই নিয়ে প্রতিবাদ করেন আশিস। শুরু হয় গোলমাল। তখন আশিসের গায়ে ধাক্কা দেয় একজন। এই আবহে জোর তর্কাতর্কি শুরু হয়। আশিসকে তখন মোটরবাইক থেকে কলার ধরে টেনে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। রাস্তায় ফেলে বুকে লাথি মারা হয়। বন্ধু তাঁকে ছাড়িয়ে কোনওভাবে বাড়ি নিয়ে গেলেও বুকে ব্যথা অনুভব করেন আশিস। তাঁর বাবা বিকাশকে ছেলে আশিস বলেন গোটা ঘটনার কথা।
আরও পড়ুন: গোষ্ঠী বিবাদে উত্তপ্ত হাওড়ার বাঁকড়া এলাকা, বোমাবাজি–ইটবৃষ্টিতে রণক্ষেত্র, গ্রেফতার ৫
অন্যদিকে এরপর রাত থেকেই বুকে ব্যথা অনুভব করেন যুবক আশিস। পরদিন সকালে বাবা বিকাশ দাস সমস্ত ঘটনার কথা জানতে পারেন। তখন নিজের শারীরিক অসুবিধার কথাও বাবাকে জানান আশিস। শুক্রবার রাতে রক্ত বমি শুরু হলে পান্ডুয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় আশিসকে। সেখান থেকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁকে আইসিইউ’তে স্থানান্তরের কথা বলেন চিকিৎসক। তখন তাঁকে কল্যানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর ওখান থেকে এনআরএস হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় আশিসের। এই ঘটনায় লাল্টু বাউল ও শুভঙ্কর বাউল নামে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পাণ্ডুয়া থানার পুলিশ।
এছাড়া আজ, রবিবার তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে পুলিশ। একইসঙ্গে পিটিয়ে খুনের অভিযোগের তদন্তও শুরু করেছে পুলিশ। ইদানিং পিটিয়ে খুনের ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে বাংলায় বলে অভিযোগ। শিশু চুরির অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। এই পিটিয়ে মারার ঘটনা কেন বাড়ছে? উঠছে প্রশ্ন। এই ঘটনা নিয়ে ওই যুবকের পরিবার অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছে। সামান্য মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করে পিটিয়ে মারার অভিযোগে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।