আবার ডিভিসি জল ছেড়েছে বলে অভিযোগ। আর ওই জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে হুগলির মহানাদের বিঘের পর বিঘে আলুর জমি। ডিভিসির আগাম না জানিয়ে জল ছাড়ে বলে অভিযোগ রাজ্য সরকারের। এবার তাই ঘটল। তার ফলে আলুর ফলন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার মাঝরাতে ডিভিসি জল ছেড়েছে। যা মহানাদের মেঘসার মৌজায় বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে পড়েছে। কৃষকরা সকালে মাঠে গিয়ে দেখতে পান, ফসল জলের তলায় চলে গিয়েছে। তখনই দ্রুত জেলার কৃষি দফতর পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেমে পড়ে। পাম্প চালিয়ে জল বের করেছে।
এই ঘটনার পর খানিকটা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। কিন্তু সারারাত আলু চাষের জমি জলের তলায় থাকায় যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে বলে কৃষকদের অভিযোগ। এই বিষয়ে কৃষকদের বক্তব্য, ‘ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সারারাত জলের তলায় থাকলে ফসল নিশ্চয়ই ভাল থাকতে পারে না। এই এলাকায় আলু ও সরষে চাষ হয়েছিল। দু’টি ক্ষেত্রেই বাড়তি জল ফসলের জন্য ক্ষতিকারক। মহানাদের মেঘসার মৌজার কম করে ১০০ বিঘে জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর হুগলি জেলা পরিষদের প্রাক্তন কৃষি–সেচ কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘বর্ধমান থেকে জল খাল দিয়ে কুন্তীতে গিয়ে পড়ে। তাতেই বাঁধ ভেঙেছে।’
আরও পড়ুন: সংসদ এখন ছুটি, সুযোগ বুঝে সপরিবারে মক্কায় তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ, নতুন লুক ধরা পড়ল
এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষকদের জন্য টাকা ছাড়া শুরু করেছেন। এখন সেই ফসল বিমার টাকাই ভরসা বলে মনে করছেন কৃষকরা। ২০২৪ সাল গোটা বছর আলুর দাম ছিল লাগামছাড়া। এখন একটু কমেছে। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে আবার আলুর দাম বাড়তে পারে। দিনে জল ছাড়লে সমস্যা চোখে পড়ত। কিন্তু রাতে তা টের পাওয়া যায় না। এই বিষয়ে হুগলি জেলা পরিষদের এখনের কৃষি–সেচ কর্মাধ্যক্ষ মদনমোহন কোলের বক্তব্য, ‘দ্রুত পদক্ষেপ করা হয়েছে। অনেকটা জল পাম্প চালিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’
কিন্তু জল সরিয়ে ফেললেও তাতে কতটা লাভ হবে তা নিয়ে সন্দিহান কৃষকরা। এই নিয়ে কৃষকদের কথায়, ‘বহুক্ষণ মাঠে জল থাকায় মাটিতে অনেকটা জল থাকবে। তাতে আলু গাছের গোড়া পচে যেতে পারে। বর্ধমান থেকে সারাং, মহানাদ, কেদারনগর হয়ে কুন্তী নদীতে ভিডিসির জল চলে আসে। মেঘসার গ্রামের দোকানতলাতে রাতে সেচবাঁধ ভেঙে যায়। তাই চাষের জমিতে হু হু করে জল ঢুকে পড়ে।’ এবার হুগলিতে আলুর মরশুম বেশ পিছিয়ে গিয়েছে। তার উপরে ফসলের বড় ক্ষতি হয়ে গেলে কৃষকরা মহাবিপদে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।