হুগলি জেলার অন্তর্গত উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের পুরনো বহির্বিভাগ এখন সমাজবিরোধীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে। কারণ এই ভাঙাচোরা ভবনে কেউ আসে না। তাই সেখানে দিনে–রাতে মদ্যপান করা থেকে শুরু করে গাঁজার নেশা করতে দেখা যায় সমাজবিরোধীদের বলে অভিযোগ। এখানে সহজে কারও চোখ পড়ে না। কারণ এই পরিত্যক্ত জায়গা ঢেকেছে আগাছায়। এই পরিত্যক্ত উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের পুরনো বহির্বিভাগ থেকে চুরি হয়ে গিয়েছে দরজা–জানালা। এমন অবস্থার সুযোগ নিয়ে দেদার মদের ফোয়ারা তুলছে সমাজবিরোধীরা বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ।
এদিকে এই কাজ চলতে থাকায় স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন, সমাজবিরোধী এবং নেশাখোরদের এটা ‘প্রিয়’ জায়গা উঠেছে। তাই দিনের বেলাতেও উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের পুরনো বহির্বিভাগে এসে জড়ো হয় সমাজবিরোধীরা। শীতের মরশুমে মদ্যপান এবং গাঁজা টানতে দেখা যায় তাদের বলে অভিযোগ। কিন্তু কেউ সাহস পায় না কিছু বলার। কারণ ওই সমাজবিরোধীদের কাছে ছুরি, চাকু, লোহার রড–সহ নানা জিনিস রয়েছে। এখানে দিনের বেলায় বসছে মদ্যপানের আসর। আর এই জীর্ণ বিল্ডিং রয়েছে থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে। এলাকার মানুষ নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
আরও পড়ুন: ব্যারাকপুর পর্যন্ত নোয়াপাড়া মেট্রো সম্প্রসারণে জটিলতা, দায়িত্বে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
অন্যদিকে এই উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের পুরনো বহির্বিভাগের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় নানা কথা কানে আসে। কিন্তু কাউকে দেখা যায় না। উঁকি মেরে যেটুকু নজরে আসে তাতে কয়েকজন সমাজবিরোধী মদ্যপান করছে। নেশায় পুরো বুঁদ হয়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন এই বাড়ি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে থাকায় সমাজবিরোধীদের স্থায়ী ঠিকানা হয়েছে এটিই। জিটি রোডের পাশে এই বাড়ি উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের অধীনে রয়েছে। সুতরাং সরকারি ভবনে সমাজবিরোধী কার্যকলাপ একেবারে বেআইনি। এখানকার মানুষজন জানান, এখানে অনেক মহিলাই রাতে বাজার করেন। আবার অনেকে রাতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরেন। কোনও অঘটন ঘটলে দায় কে নেবে?
এই পরিস্থিতি হওয়ায় তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে পুলিশকে লিখিত অভিযোগ করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপার মহসিন মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘এই বিষয়টি এখন জানতে পেরেছি। ওখানে গেট বসানো হবে। পুলিশকেও জানানো হবে। ওই ভবনকে নার্সিং স্কুল করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এখনও অনুমোদন মেলেনি।’ সুপারের কথায়, ‘সুডার পক্ষ থেকে জায়গা পরিষ্কার করা হয়। আমরা পূর্ত দফতরকে জানাব। পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।’