দশমীর ছুটি কাটাতে মন্দারমণি বেড়াতে এসেছিল কয়েকটি পরিবার। ঘর ভাড়া নিয়েছিল একটি নামজাদা সংস্থার হোটেলে। কিন্তু, তারপর ওই পর্যটকদের সঙ্গে যা যা ঘটল, তাতে তাঁরা উদ্বিগ্ন এবং আতঙ্কিত! ঠিক কী কী ঘটেছিল তাঁদের সঙ্গে? সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে -
ঘটনা:১
তখন হোটেলের ঘরের ভিতরেই ছিলেন এক পর্যটক। হঠাৎ, খেয়াল করেন ঘরের দরজায় কিছু একটা ঘষার আওয়াজ হচ্ছে। কিচ্ছুক্ষণের মধ্যেই তিনি বুঝতে পারেন, হোটেলেরই এক কর্মী 'মাস্টার কি' ব্যবহার করে তাঁদের ঘরে ঢোকার চেষ্টা করছেন! কিন্তু, ভিতরে অতিথিরা রয়েছেন বুঝতে পেরেই ওই কর্মী সেখান থেকে চলে যান।
এই ঘটনায় ওই পর্যটক কিছুটা অবাক হলেও এ নিয়ে কোনও চেঁচামিচি করেননি। তবে, ওই হোটেল কর্মীর আচরণে তাঁর মনে সন্দেহ হতে থাকে।
ঘটনা:২
একে একে অন্যান্য ঘরের পর্যটকরাও খেয়াল করেন, তাঁরা বাইরে যাওয়ার আগে ঘরের ভিতর যে টাকা পয়সা রেখে গিয়েছিলেন, ফিরে এসে সেগুলো আর পাচ্ছেন না। অথচ, তাঁরা ঘরে চাবি লাগিয়েই বাইরে গিয়েছিলেন। ফিরে আসার পরও নিজেরাই চাবি খুলে ঘরে ঢুকেছেন।
ঘটনা:৩
এই ঘটনা ছিল আরও ভয়ঙ্কর। ওই পর্যটক দলের মধ্যেই একজন হঠাৎ খেয়াল করেন, হোটেলের ঘরের ভিতরেই তাঁর ব্যক্তিগত চারচাকা গাড়ির চাবি রাখা ছিল। কিন্তু, সেটি নেই! হোটেল চত্বরেই ওই পর্যটক তাঁর গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু, সেই সময় পর্যটক সেখানে গিয়ে দেখেন, তাঁর গাড়িও সেখানে নেই।
এই ঘটনাগুলি ঘটে শনিবার সন্ধে থেকে রাতের মধ্যে। সারা রাত প্রবল উদ্বেগে কাটানোর পর ওই পর্যটকরা দেখেন, ভোর রাতে হোটেলের যথাস্থানে ঢুকছে 'নিরুদ্দেশ' হওয়া গাড়িটি। সেটি চালিয়ে আনছেন হোটেলের সেই কর্মী, যিনি 'মাস্টার কি' ব্যবহার করে এক পর্যটকের ঘরে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন!
এরপর আর চুপ করে থাকেননি ওই পর্যটকরা। তাঁরা ওই কর্মীর বিরুদ্ধে হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত হোটেল কর্মীই 'মাস্টার কি' ব্যবহার করে পর্যটকদের ঘর থেকে টাকা এবং গাড়ির চাবি চুরি করেন। তারপর সেই গাড়ি নিয়ে সারা রাত ধরে চলে হুল্লোড়। অবশেষে ভোর বেলা 'ঘরের ছেলে ঘরে ফেরে'।
এই অভিযোগ পাওয়া মাত্রই হোটেল কর্তৃপক্ষ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। মন্দারমণি কোস্টাল থানার পুলিশ অভিযুক্ত হোটেল কর্মীকে আটক করেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
এদিকে, এই ঘটনায় ভুক্তভোগী পর্যটকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। তারা স্বীকার করে নিয়েছে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের আরও সতর্ক ও কঠোর হওয়া উচিত ছিল।
আর ওই পর্যটকদের বক্তব্য হল, বেড়াতে এসে এমন অভিজ্ঞতা আগে কখনও হয়নি। কিন্তু, এবার যা হল, তা অত্যন্ত উদ্বেগ ও আতঙ্কের।