ছন্দে ফিরতে শুরু করেছিল উপকূলবর্তী জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলি। কিন্তু আবার পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা, তাজপুর, মন্দারমণির হোটেলের ব্যবসায়ীদের উপর পড়ল কোপ। তাঁদের ব্যবসায় আবার লাগল ধাক্কা। উপকূলের সুরক্ষাবিধি অমান্য এবং প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র না থাকায় মন্দারমণিতে ৫০টি হোটেল এবং রিসর্টকে জাতীয় পরিবেশ আদালতের আদেশ মেনে বন্ধের নির্দেশ দিল পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।
ঠিক কী অভিযোগ উঠেছে? হোটেলগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ, দূষণ ছড়ানো হচ্ছে সৈকত লাগোয়া হোটেলগুলি থেকে। এই তালিকায় কম করে ৫০টি হোটেলের নাম রয়েছে। আদালত নির্দেশ সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় পরিবেশ বিধি মানা হয়নি এবং পর্ষদের কাছ থেকেও হোটেল চালানোর ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি। আর হোটেলের ব্যবহৃত জল সরাসরি সমুদ্রে এসে পড়ছে। সমুদ্রে দূষণ ছড়াচ্ছে। তাই ৫০টি হোটেল বন্ধের নির্দেশ দিল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। এই ব্যবহৃত জল পরিশোধনের জন্য হোটেলেগুলিতে ইপিপি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থাকা বাধ্যতামূলক। এই ৫০টি হোটেলের একটিতেও এই ব্যবস্থা নেই।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এই নির্দেশ গিয়েছে মন্দারমণি কোস্টাল থানার ওসি’র কাছে। অবিলম্বে এই ৫০টি হোটেল–রিসর্ট বন্ধ করতে বলা হয়েছে। গতবছর দূষণ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে হোটেলগুলিকে শোকজ নোটিশ দিয়েছিল পর্ষদ। তারপরও কোনও হেলদোল দেখা যায়নি বলেই অভিযোগ। তাই এবার হোটেলগুলিকে বন্ধ করার নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বক্তব্য কী? দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে খবর, ১৯৭৪ সালের জলদূষণ বিরোধী আইনের ২৫ ও ২৬ নম্বর ধারা এবং ১৯৮১ সালের বায়ুদূষণ বিরোধী আইনের ২১ নম্বর ধারা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরিবেশগত ছাড়পত্র না থাকলে এভাবে কোনও রিসর্ট বা হোটেল চালানো যায় না। হোটেলগুলি বন্ধ করার জন্য প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিতে বলা হয়েছে জেলা পুলিশকে। এই বিষয়ে মন্দারমণি বিচ হোটেলিয়ার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবদুলাল দাস মহাপাত্র বলেন, ‘মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে যাতে বিষয়টি দেখা হয় সেই আবেদন জানাব সরকারের কাছে। অ্যাসোসিয়েশনের দিক থেকে প্রয়োজনীয় চেষ্টা করা হবে।’