বারো ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘উচ্ছ্বাস’ বদলে গিয়েছে ‘বিষাদ’-এ। সেই শুভেন্দু অধিকারীর ‘হোয়্যাটসঅ্যাপ’ ধাক্কার মধ্যে নয়া জল্পনা উস্কে দিলেন তৃণমূলের অপর এক ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা শীলভদ্র দত্ত। সংক্ষিপ্ত ফেসবুকবার্তায় লিখলেন, ‘বন্ধু দেখা হবে’।
তৃণমূলের সঙ্গে ‘মনমালিন্য’-এর মধ্যে সেই তিন শব্দের ফেসবুক বার্তা নিয়ে গুঞ্জন চরমে উঠেছে। শীলভদ্র রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে আরও বাড়িয়েছে টেমপ্লেটের রং। একাধিক রং থাকলেও গেরুয়া রঙের উপরেই সেই বার্তা লিখেছেন শীলভদ্র। তা যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, কোন বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার কথা বলছেন শীলভদ্র? বুধবার দুপুরে শুভেন্দুর হোয়্যাটসঅ্যাপ বার্তার কয়েক ঘণ্টার পর কি নন্দীগ্রামের বিধায়কের উদ্দেশেই সে কথা বলেছেন বর্ষীয়ান নেতা? বিশেষত মঙ্গলবার তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন, শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। শুভেন্দু প্রয়োজনে ফোন করেন। তিনিও প্রয়োজনে শুভেন্দুর সঙ্গে কথাবার্তা হয়। তবে শীলভদ্র দাবি করেছিলেন, শুভেন্দুর সঙ্গে রাজনীতির প্রসঙ্গে তাঁর কোনও কথা হয় না। সেই দাবিতে অবশ্য জল্পনা থামছে না। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি দু'জনের রাজনৈতিক গতিপথ একই খাতে যাচ্ছে? আর আর সেই রাজনৈতিক ভবিষ্যতের সঙ্গে কি গেরুয়া রঙের কোনও যোগ আছে?
সে উত্তর অবশ্য মেলেনি। এখনও উত্তর ২৪ পরগনার জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আশা, তৃণমূলের ‘পরিবার’-এই থাকবেন শীলভদ্র। সাময়িক যে ক্ষোভ আছে তা মিটে যাবে। তবে শীলভদ্রের ‘মানভঞ্জন’-এর কাজটা যে অত্যন্ত দুরূহ, তা তৃণমূলের অন্দরে অনেকটাই স্পষ্ট বলে সূত্রের খবর। মঙ্গলবার বিকেলে শীলভদ্রের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল জ্যোতিপ্রিয়কে। যিনি দাবি করেছিলেন, ‘অসুস্থ’ শীলভদ্রের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। যদিও তৃণমূল বিধায়ক পরে জানান, তাঁকে কেউ কেউ জোর করে অসুস্থ বানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। একইসঙ্গে প্রশ্ন করেন, রোগী মৃত্যুর পর ভেন্টিলেশনে পাঠিয়ে লাভ কী?
তাতে রাজনৈতিক মহলের ধারণা, যেভাবে গতিপ্রকৃতি এগোচ্ছে, তাতে তৃণমূলের ‘ভেন্টিলেশন’-এ কি কাজ হবে কিনা, তা শীঘ্রই বোঝা যেতে পারে।