দিনকয়েক আগে নদিয়ার চাপড়ার মহেশনগরে একটি বাড়ির একাংশ প্রবল শব্দে ধসে পড়েছিল। প্রাথমিকভাবে সেই ঘটনায় পুলিশের মনে হয়েছিল, দুর্বল নির্মাণের কারণেই বাড়ি ধসে গিয়েছিল। পরে তদন্ত নেমে বোমা বিস্ফোরণের সম্ভাবনা উঠে আসে। ফরেন্সিক পরীক্ষাতেও জানা গিয়েছে বোমার আঘাতেই বাড়ি ধসে গিয়েছিল। ইতিমধ্যেই বাড়ির ধৃত মালিককে জেরা করে গ্রাম থেকে বেশ কিছু বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বাড়ি বসে যাওয়ার ঘটনায় বোমা বিস্ফোরণের সম্ভাবনা উঠে আসতেই পুলিশ বাড়ির মালিক সাইফুল শেখকে বিস্ফোরক আইনে গ্রেফতার করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মতিন শেখের আত্মীয় এই সাইফুল শেখ। তাঁকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, গ্রামের এক বাসিন্দা এবাদত শেখের কাঁঠালবাগানে ঝোপের ভিতরে বোমা মজুত করা রয়েছে। সেখানে হানা দিয়ে পুলিশ সোমবার রাতে বোমা উদ্ধার করে। সেখান থেকে প্রায় নয়টি তাজা উদ্ধার হয়েছে। পরে মঙ্গলবার বম্ব স্কোয়াডের কর্মীরা সেখানে গিয়ে বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করেছেন। পুলিশ সাইফুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও জানতে পেরেছে, বাড়িতে বোমা মজুত রাখা ছিল। প্রথমে এই স্বীকার করতে চায়নি সাইফুল শেখ। কিন্তু ফরেন্সিক রিপোর্ট হাতে পেতেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এরপরে জেরার মুখে সে স্বীকার করে নেয় বাড়ি রান্নাঘরে বোমা মজুত রাখা ছিল। সেই বোমা কোনওভাবে ফেটে যায়। আর তারপরে বিকট শব্দে ধসে পড়ে বাড়ির একাংশ। বাড়ির ছাদ এবং দেওয়াল ধসে যায়। বোমা বাঁধার জন্য সুতলিও মজুত রাখা হয়েছিল বাড়িতে। তবে ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই বিস্ফোরণের চিহ্ন ও নমুনা ঢাকা পড়ে গিয়েছিল বলে পুলিশ প্রথমে বুঝতে পারেনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মতিন শেখের মদতেই বোমা মজুত রাখা হয়েছিল। যদিও পঞ্চায়েত সদস্যের দাবি, সাইফুল শেখ তাঁর পাড়াতুতো ভাগ্নে। নিজের আত্মীয় নন। ফলে সে কী করছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তাছাড়া, তিনি এখন গ্রামে থাকেন না বলে দাবি করেছেন। এদিকে, বিস্ফোরণ ঘটনার পরের দিনই চাপড়ার তৃণমূল বিধায়ক রুকবানুর রহমান দাবি করেছিলেন, দুর্বল নির্মাণের কারণেই বাড়ি ধসে পড়েছিল। তবে এদিন তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে বলেছিলাম। এখন পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্তে যেটা উঠে আসছে সেটাই সত্যি হবে। আমরা চাই সত্যি প্রকাশ্যে আসুক।’
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup