মানবাধিকার কমিশন রিপোর্ট যাই দিয়ে থাকুক বাংলার রাজনৈতিক ঐতিহ্য দেখা গেল পূর্ব মেদিনীপুরে। যা অনেকে ভাবতেই পারছেন না, সেটাই দেখা গেল জনসমক্ষে। একুশের নির্বাচনের আগে দলবদল করেছিলেন তাঁরা। ফলপ্রকাশের পর আতঙ্কে তাঁদের পরিচয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল ‘ঘরছাড়া’। এবার দীর্ঘ দু’মাস পর ঘরে ফিরলেন ‘ঘরছাড়া’ মানুষরা। রাজনীতির উর্দ্ধে উঠে প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে রাস্তায় হাঁটলেন যুযুধান তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির নেতা থেকে বিধায়ক। আর এই নজির দেখা গেল খেজুরিতে। যদিও অনেকে বলছেন, মানবাধিকার কমিশনের গুঁতোয় কাজ হয়েছে।
একুশের নির্বাচনের আগে আস্ফালন দেখিয়েছিল বিজেপি। ক্ষমতায় ফিরে তৃণমূল কংগ্রেস সেই আস্ফালনের জবাব দিতে থাকে। আর তাতেই আতঙ্কিত হয়ে বাড়ি–ঘর ছেড়ে অন্যত্র পালান দলবদল করা কর্মী–সমর্থকরা। খেজুরি, ভগবানপুর, পটাশপুর এবং নন্দীগ্রাম–সহ পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিজেপি কর্মী–সমর্থকরা ঘরছাড়া বলে অভিযোগ উঠতে থাকে। এদিন খেজুরি–২ নম্বর ব্লকের বারাতলায় ঘরছাড়া বিজেপি কর্মী–সমর্থকদের ঘরে ফেরানো হয়। পুলিশ এখানে উদ্যোগ নিলেও কর্মী–সমর্থকদের সঙ্গে হাজির ছিলেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক এবং এলাকায় বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী পার্থপ্রতিম দাস। এই ঘটনার সাক্ষী থাকল খেজুরি।
ঠিক কী দেখা গেল? পুলিশ নিরাপত্তা দিয়ে সকলকে নিজের নিজের বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন। বারাতলায় পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও পাশেই নতুন পুলিশ ক্যাম্প করা হয়েছে। সেখানে যে সব ঘরছাড়া বিজেপি কর্মী–সমর্থকরা বাড়ি ফিরেছেন তাঁরা তাঁদের সমস্যার কথা জানাতে পারবেন বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই তৃমমূল কংগ্রেস নেতাদের ধন্যবাদও জানিয়েছেন। এমনকী তাঁদের সাহায্যও চেয়েছেন।
এই বিষয়ে খেজুরির তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী পার্থপ্রতিম দাস বলেন, ‘বাংলায় ক্ষমতায় আসতে পারেনি বলে অনেকে আতঙ্কে নিজের থেকে বাড়ি ছেড়ে দিয়েছিলেন। আমরা চাই তারা নিজেদের বাড়িতে ফিরে জীবন যাপন করুক। তাদের সমস্যা জানার জন্য পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি হিসেবে আমি উপস্থিত ছিলাম।’ আর বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক বলেন, ‘আমাদের দলের বহু কর্মী–সমর্থকের পরিবার ঘরছাড়া ছিলেন। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে প্রশাসন ৫৬টি পরিবারকে ঘরে ফিরিয়েছে।’ ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে শাসক এবং বিরোধী যৌথ উদ্যোগের বিরল ছবি দেখল খেজুরি।