অভাবের সংসারে ছেলে-মেয়ের পড়াশুনো বন্ধ করতে দেননি বাবা মা। মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে কলেজে পড়ছিল মেয়ে। এরই মধ্যে হঠাৎ বেপাত্তা। মাঝে ফোন করে মা-কে ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে জানালেও মেয়ের জঙ্গি হয়ে ওঠার খবর ঘুণাক্ষরেও জানত না তারা। শনিবার ঢাকায় প্রজ্ঞা দেবনাথের গ্রেফতারির পর মা গীতাদেবীর দাবি, অপরাধ করে থাকলে মেয়ের শাস্তি চাই।
হুগলির ধনেখালির বাসিন্দা গীতাদেবী জানান, তাঁর স্বামী প্রদীপবাবু পেশায় দিনমজুর। কখনো কাজ থাকে কখনও থাকে না। সংসার চালানোর জন্য তিনি সেলাই করেন। এভাবেই চলছিল। কিন্তু ২০১৬ সালের ২৪ সেপ্টেম্বরের পর বদলে যায় অনেক কিছু। সেদিন, কলকাতায় কাজ আছে বলে বাড়ি থেকে বেরোয় মেয়ে। তার পর আর তার খোঁ মেলেনি। বেশ কিছুদিন পর ফোন করে সে বাড়িতে জানায়, ইসলাম গ্রহণ করেছে সে। তার পর থেকে মেয়ের সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ নেই তাদের।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, কলেজে পড়ার সময় থেকেই হাবভাব বদলে দিয়েছিল প্রজ্ঞার হাবভাব। অপরিচিতদের সঙ্গে মেলামেশা করতে দেখা যেত তাঁকে। এই নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন পড়শিরা। এর পরই ধনেখালি কলেজে সংস্কৃত অনার্সের তৃতীয় বর্ষে পড়ার সময় বাড়ি ছাড়ে সে। পড়শিরা জানিয়েছেন, গরিব বাড়ির চুপচাপ মেয়েটাকে সবার অজান্তেই মগজ ধোলাই করেছে জঙ্গিরা।
বাংলাদেশ পুলিশের জঙ্গিদমন শাখা বলছে, ২০০৯ সালে ইসলাম গ্রহণ করে প্রজ্ঞা। যদিও তা মানতে নারাজ তাঁর মা। সেদেশের গোয়েন্দাদের দাবি, ISIS-এর ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ নব্য জেএমবির মহিলা শাখার পরিচালনার দায়িত্বে ছিল সে। সেজন্য পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে নিয়মিত যাতায়াত করত প্রজ্ঞা।