মালদা থেকে এক নাবালিকাকে অপহরণ করেছিল দুষ্কৃতীরা। খবর আসে পুলিশের কাছে। ওই শিশুকে বাইকে চাপিয়ে চম্পট দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তবে তার সাড়ে ৪ ঘণ্টার মধ্য়ে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের নাম মনসুর আলম,এজাজ আহমেদ। ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। কিন্তু কীভাবে এই ঘটনার কিনারা করতে পারল পুলিশ? এনিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন মালদা জেলার পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব।
রাজ্য পুলিশের এক্স হ্যান্ডেলেও এনিয়ে বিস্তারিতভাবে জানানো হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে,
'মালদা থেকে অপহৃত নাবালিকা, রায়গঞ্জ থেকে উদ্ধার সাড়ে চার ঘন্টার মধ্যে
খবরটা মালদা জেলার হরিশচন্দ্রপুর থানায় আসে সকাল ১১ :৪০ নাগাদ। এক স্থানীয় ব্যবসায়ীর বাড়ির সামনে খেলছিল তাঁর সাত বছরের শিশুকন্যা। হঠাৎই একটি বাইকে করে দুই হেলমেট-পরিহিত দুষ্কৃতী এসে মেয়েটিকে তুলে নিয়ে পালিয়ে যায় দ্রুতগতিতে। কী বাইক? বাবা জানালেন, সম্ভবত পালসার। নম্বরপ্লেট ছিল না। মেয়েটির ছবি জোগাড় করা হল। জেনে নেওয়া হল, কী পোশাক পরেছিল।
এলাকাটি বিহার সীমান্তের নিকটবর্তী। মালদা পুলিশের তরফে বিহার যাওয়ার সমস্ত রাস্তায় সঙ্গে সঙ্গে নাকাবন্দি করা হয়। যাবতীয় তথ্যসহ অপহরণের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয় উত্তরবঙ্গের পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিকে, বিশেষত ইসলামপুর এবং রায়গঞ্জকে। সেখানেও শুরু হয় নাকা চেকিং। দুপুরের দিকে অপহরণকারীদের তরফে মেয়েটির বাবার কাছে ফোন আসে, 'পুলিশে কিছু জানালে মেয়েকে আর ফিরে পাবেন না।'
ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করা শুরু হয় সঙ্গে সঙ্গেই। চলতে থাকে নাকা চেকিং, রাস্তায় নামেন মালদা, ইসলামপুর এবং রায়গঞ্জ জেলার প্রতিটি থানার অফিসাররা, পদস্থ অফিসারদের তত্ত্বাবধানে।
বিকেল চারটে দশ নাগাদ রায়গঞ্জের করণদীঘি এলাকার নিকটস্থ একটি টোল বুথের কাছে নাকা চেকিং-এ হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় দুই অপহরণকারী। উদ্ধার করা হয় নাবালিকাকে। আনন্দের খবর, সে সুস্থ আছে, ভাল আছে।
দুই দুষ্কৃতীই মালদার হরিশচন্দ্রপুরের বাসিন্দা। নাম, ইজাজ আহমেদ এবং রাজু মুস্তাফা। এদের কাছে একটি ব্যাগ ছিল। যা থেকে পাওয়া গেছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, কিছু তাজা কার্তুজ। মেয়েটিকে নিয়ে ইটাহার, করণদীঘি, ডালখোলা হয়ে বিহারে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল ওদের। তারপর মেয়েটির বাবার থেকে মোটা টাকা মুক্তিপণ আদায়ের ছক। অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে সেই মতলব বানচাল করে দিয়েছে মালদা এবং রায়গঞ্জ পুলিশ।
রাজ্যের সীমান্তে কড়া নজরদারি অব্যাহত রয়েছে সর্বত্র। ভিনরাজ্য থেকে এসে অপরাধ করে যাওয়া, বা এ রাজ্যে অপরাধ করে পার্শ্ববর্তী রাজ্যে পালিয়ে যাওয়া, কোনওটাই হতে দেব না আমরা।'