শিয়রে দ্বিতীয় দফার ভোট। তার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের মন্তব্যকেই এবার ভোটের হাতিয়ার করতে চাইছে গেরুয়া শিবির। ইতিমধ্যেই নুসরতের প্রচারের সময়ের ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিও নিজেদের ওয়ালে পোস্টও করে দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। যেখানে নুসরতকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘মুখ্যমন্ত্রীর জন্যও এত করি না’।
এবার শৈলশহরের মাটি ছুঁয়েই বিজেপি’র কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় তৃণমূল সাংসদ নুসরতকে কটাক্ষ করলেন। সোমবার শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছন কৈলাস। সেখানেই নুসরতের সাম্প্রতিকতম ভাইরাল হওয়া ভিডিওর প্রসঙ্গে তাঁর নাম না—করেই কৈলাস বলেন, ‘ ওই দলের কোনও শৃঙ্খলা নেই। নেতা-নেত্রী মন্ত্রীদের কীভাবে সম্মান দিয়ে কথা বলতে হয়, তা জানে না—তৃণমূল।’
এদিন সকালে বাগডোগরা বিমান বন্দরে নামেন কৈলাস। আজ পাহাড়েই থাকবেন তিনি। কার্শিয়াংয়ে বিজেপি প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময়, তিনি তাঁদের সঙ্গে থাকবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি প্রথম দফার নির্বাচনের ৩০টি আসনও বিজেপি’র দখলেই আসবে বলেও আশাপ্রকাশ করেছেন বিজয়বর্গীয়।
ওদিকে প্রথম দফার নির্বাচনে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ইভিএম মেশিনে কারচুপির অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। তাঁদের অভিযোগ ছিল, ভোটাররা যেই বোতাম টিপেই ভোট দিচ্ছেন না—কেন, সব বিজেপি’র প্রার্থীর নামে গিয়ে পড়ছে। এদিন এপ্রসঙ্গে কৈলাস বলেন, ‘ কে কি বলছে তাতে কিছু যায় আসে না। মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে।’
অন্য দিকে, রাজ্যে চলা হিংসার ঘটনা নিয়ে কৈলাস বলেন, ‘ পশ্চিমবঙ্গে এটাই শেষ অশান্তির ভোট। আগামীতে এরাজ্যে আর কোনও অশান্তির ভোট হবে না। বাংলা থেকে বিদায় নেবে তৃণমূল। ফলে, হিংসার মতো কোনও ঘটনা বাংলায় আর ঘটবে না।’
নুসরতের ভাইরাল হওয়া ভিডিওয় ঠিক কি ঘটেছিল? অবশ্য এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ‘হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা’।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হওয়া নুসরতের সেই ভিডিওয় কোনও তারিখের উল্লেখ করা নেই৷ বা কোথায় ঘটনাটি ঘটেছে তারও উল্লেখ নেই। তবে ওই ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, তৃণমূলের হয়ে হুডখোলা একটি গাড়িতে প্রচার চালাচ্ছেন বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান৷ সেখানেই শোনা গিয়েছে, নুসরতকে মেন রোড পর্যন্ত প্রচারে থাকার জন্য অনুরোধ করছেন এক দলীয় কর্মী৷ ওই কর্মীকে বলতে শোনা যায়, ‘মেন রোড সামনেই৷ এখান থেকে মাত্র আধ কিলোমিটার৷’ প্রথম দু’বার হাত নেড়ে আপত্তি জানান অভিনেত্রী-সাংসদ৷ তারপরও তাঁকে জোড়াজুড়ি করা হলে, তিনি মেজাজ হারিয়ে ফেলেন৷ রেগে গিয়ে তৎক্ষণাৎ গাড়ি থেকে নামতে নামতে নুসরতকে বলতে শোনা যায়, ‘এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে প্রচার করছি৷ মুখ্যমন্ত্রীর জন্যও এত করি না৷’ এরপরেই এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় হয়ে যায় রাজ্য রাজনীতি।