এখন ভারী বর্ষা চলছে বঙ্গে। তার জেরে নানা রাস্তায় জল জমে গিয়েছে। নাগাড়ে বৃষ্টির জেরেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই আবহে হাওড়ায় বৃষ্টিতে রাস্তায় জমা জলে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক তারে তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হয়েছে কলেজ পড়ুয়া এক তরুণীর। এই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে যায় হাওড়ায়। সালকিয়ার ভৈরব ঘটক লেনের নির্মীয়মাণ ৬ তলা বিল্ডিংয়ের নির্মাণ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে পুরসভা নোটিশ দিয়েছিল আগেই। কিন্তু তাতেও কাজ থামেনি। আর ওই বিল্ডিং থেকেই ঝুলতে থাকা একটি বিদ্যুতের খোলা তার গত বৃহস্পতিবার বৃষ্টির রাতে দোকানের শাটারে স্পর্শ করে ছিল। তার জেরেই মর্মান্তিক পরিণতি হয় কলেজ পড়ুয়া পৌরবী দাসের। তাই এবার প্রোমোটারের বিরুদ্ধে মামলা করতে চলেছে হাওড়া পুরসভা।
এদিকে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মালিপাঁচঘড়া থানার পুলিশ। ছাত্রীর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হাওড়া পুরসভা প্রোমোটারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে চলেছে বলে খবর। এবার সেই এফআইআরের ভিত্তিতে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাওড়া পুরসভা। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ওই ছাত্রীর বলে অভিযোগ। বিল্ডিংয়ের প্রোমোটারের বিরুদ্ধে এফআইআরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাওড়া পুরসভা। এই বিষয়ে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘এই দুর্ঘটনাটি হাওড়া পুরসভার ভুলে হয়নি। তারপরও আমি পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এবং হাওড়া পুরসভাকে বলেছি, যে সব এলাকায় জল জমে সেখানে যেন বিদ্যুতের তার সরিয়ে ফেলা হয়।’
অন্যদিকে এই ঘটনার পর থেকে হাওড়ার বাসিন্দারাও যথেষ্ট ক্ষুব্ধ। তাঁরা নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পথেঘাটে। প্রোমোটারের শাস্তি চেয়েছেন তাঁরা। এই দুর্ঘটনার বিষয়ে হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘বিল্ডিংটি থেকে একাধিক সংযোগ গিয়েছিল বাইরের দোকানগুলিতে। সেটা নিয়ম মেনে হয়নি। এই ঘটনার দিন বৃষ্টিতে ভেজা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই মৃত্যু হয় ছাত্রীর। এই ধরনের বেআইনি কাজ না হলে দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। তাই ‘স্টপ ওয়ার্ক’ নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।’
তবে হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, নির্মীয়মাণ ওই বিল্ডিংয়ে একটি বৈধ মিটার আছে। কিন্তু সেখান থেকে অবৈধভাবে একাধিক সংযোগ টানা হয়েছে। এই বিষয়টি সিইএসসি’কে খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছে। হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তীর কথায়, ‘বিল্ডিংয়ের নির্মাণে ভুল ছিল। এই সন্দেহ তৈরি হতেই হাওড়া পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা বিল্ডিংয়ের প্ল্যান খতিয়ে দেখতে শুরু করেন। গাফিলতি থাকলে এবার সরাসরি এফআইআর করা হবে। কাজ বন্ধের নোটিশ দেওয়ার পরেও কেমন করে বিল্ডিংয়ের কাজ চলছিল? সেটা দেখতে হবে।’