বাংলার পুলিশের সাফল্যে নিখোঁজ হওয়া তিন বছরের শিশু উদ্ধার হল। এই শিশু হাওড়া স্টেশন থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। এই নিয়ে জোর আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। এবার নিখোঁজ শিশুকে রাজস্থান থেকে উদ্ধার করে সেই প্রশ্নের জবাব দিল বাংলার পুলিশ। এই নিখোঁজ শিশুকে উদ্ধারের কাজে বাংলার পুলিশ এবং রাজস্থান পুলিশের যৌথ অপারেশনে শিশুকন্যাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে খবর। এই অপহরণ করে পাচার করার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সরোজ কাঞ্জার–সহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এই শিশুকন্যাকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছিল গোটা পরিবার। নিজেদের মেয়েকে খুঁজে পাবে কিনা তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল সন্দেহ। এবার পরিবারের কাছে পুলিশের পক্ষ থেকে খবর পৌঁছে গিয়েছে। আর তাতেই নতুন জীবন পেলেন ওই শিশুটির মা–বাবা। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৫ মার্চ শিশুটি তার মায়ের সঙ্গে হাওড়া স্টেশনে ট্রেন ধরার জন্য গিয়ে ছিল। তখন সাহানারা বেগম নামে এক মহিলা তাদের সঙ্গে আলাপ করে। ওই আলাপ থেকে শিশুটির মায়ের বিশ্বাস অর্জন করে। কিছুক্ষণ গল্প করার পর সাহানারা ওই শিশুটিকে নিয়ে সামনের একটি দোকানে যায়। আর তারপর থেকেই মেয়েটির কোনও খোঁজ মেলেনি।
আরও পড়ুন: ‘নিউ মার্কেট সংস্কারের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে’, বিধানসভায় বড় ঘোষণা করলেন ফিরহাদ
তখন গোটা হাওড়া স্টেশন তোলপাড় করে ফেললেও খুঁজে পাওয়া যায়নি মেয়েকে। এই নিয়ে পুলিশ প্রশাসন–সহ সর্বত্র দরবার করেছিলেন মেয়েটির মা। যদিও মেয়েটির মাকে অনেক অপমান সহ্য করতে হয়েছিল আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে। একটা অচেনা মহিলার সঙ্গে কেন মেয়েকে পাঠিয়ে দিলেন তিনি? এই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় শিশুর মাকে। তার সঙ্গে সন্তান হারিয়ে যাওয়ার কষ্টে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। কারণ তাঁর হাত থেকেই এমন ঘটনা ঘটেছে। মেয়েটির মা রেল পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। তদন্তে নেমে পুলিশ স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখেন। সাহানারা বেগম এই শিশুকন্যাকে নিয়ে একটি মিনি বাসে ওঠে। সেই ছবি ধরা পড়ে।
এই ঘটনায় জোরদার তদন্ত শুরু করে রাজ্য পুলিশ। তদন্তে নানা সূত্র মেলে। সেই সূত্র ধরেই গত ১১ মার্চ পুলিশ সাহানারা বেগম এবং পাচারচক্রের এক সদস্য মুফাজা বিবিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার করার পর দফায় দফায় চলে জেরা। তখনই জেরায় ভেঙে পড়ে মুফাজা বিবি স্বীকার করে যে, জয়পুর স্টেশনে শিশুটিকে সরোজ কাঞ্জারের হাতে তুলে দিয়েছে। আর সেখান থেকে তাকে রাজস্থানের সওয়াই মাধোপুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই তথ্য হাতে পেয়েই বাংলার পুলিশ তৎপরতার সঙ্গে শিশুটিকে রাজস্থান থেকে উদ্ধার করে। আর তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়।