কোভিড আক্রান্ত স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন বছর উনিশের ছেলেকে হত্যা করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন হাওড়ার ৩৬ বছর বয়েসি বধূ।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতা শহর থেকে ৪০ কিমি পশ্চিমে হাওড়া জেলার রাজাপুরের বাসিন্দা বছর পঁয়তাল্লিশের এক ব্যক্তি গত এক সপ্তাহের বেশি জ্বরে ভুগছিলেন। শনিবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ও প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় তাঁকে দ্রুত উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভরতি করা হয়।
তাঁর শ্বশুর জানিয়েছেন, হাসপাতালে ভরতি করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওই ব্যক্তি মারা যান। শ্বাসকষ্ট ও জ্বরে ভুগছিলেন বলে তাঁর নমুনা পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়। সোমবার রিপোর্ট এলে দেখা যায়, তিনি কোভিড পজিটিভ ছিলেন। তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করে পুর কর্তৃপক্ষ।
অন্ত্যেষ্টির আগে মৃত ব্যক্তিকে দূর থেকে দেখতে দেওয়া হয় তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে। ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরে এসে বাড়ির ভিতর থেকে সব দরজা জানলা বন্ধ করে দেন ওই মহিলা।
এর কয়েক ঘণ্টা পরে মেয়ে ও নাতির জন্য খাবার দিয়ে এক আত্মীয়কে পাঠান একই পাড়ার বাসিন্দা ওই মহিলার বাবা। কিন্তু দরজায় কড়া নেড়ে কারও সাড়াস পাওয়া যায়নি।
হাওড়া (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সৌম্য রায় জানিয়েছেন, ‘প্রতিবেশীদের খবর দেওয়া হলে তাঁরা জানলা ভেঙে সিলিং থেকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত মহিলার দেহ দেখতে পান। তাঁর ছেলেকে মেঝেয় পড়ে থাকতে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। সম্ভবত আত্মহত্যা করার আগে ছেলেকে গলা টিপে খুন করেছিলেন মহিলা। আমরা ময়না তদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছি।’
পুলিশ জানিয়েছে, কোভিডে মৃত ব্যক্তি এক বেসরকারী সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর স্ত্রী ছিলেন গৃহবধূ।
ওই পরিবারের এক প্রতিবেশী মিল হালদার জানান, ‘পরিবারের একমাত্র রোজগেরের মৃত্যু মেনে নিতে না পেরেই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বধূ।’