উচ্চমাধ্যমিকের বায়োলজিক্যাল সায়েন্সের প্রশ্ন একেবারে সহজ হল। এতটাই সহজ হয়েছে যে ছাত্র-ছাত্রীরা একেবারে ছাঁকা নম্বর তুলতে পারবেন বলে মনে করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের মতে, বেশিরভাগ প্রশ্ন একদম সহজ-সরল করা হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা যেমন পড়ে গিয়েছেন, তেমনই এসেছে। যে কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর একটু ভেবেচিন্তে দিতে হবে, সেগুলির যে বিকল্প আছে, তা বেশ সহজ। ফলে নম্বর তুলতে কোনও সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তারকেশ্বর ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপিকা শ্রেয়া সামন্তের কথায়, ‘এবারের প্রশ্নপত্র খুবই সহজ হয়েছে। আমার মনে হয়, যেহেতু ইয়ার সিস্টেমে এবার শেষ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হচ্ছে, তাই প্রশ্নপত্র একদম সহজ করা হয়েছে। একদম ডিরেক্ট প্রশ্ন এসেছে। যারা ভালো মানের ছাত্র-ছাত্রী, তারা খুব ভালো নম্বর পাবে। আর মাঝারি মানের ছাত্র-ছাত্রী, তারাও অনায়াসে ৬৫ শতাংশ নম্বর তুলতে পারবে।’
MCQ প্রশ্ন কি ঘুরিয়ে করা হয়েছে?
প্রশ্নের খুঁটিনাটি ব্যাখ্যা করে তিনি জানিয়েছেন, এক নম্বরের মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চেন (এমসিকিউ) অংশে যে যে প্রশ্ন এসেছে, সেগুলি একদম ডিরেক্ট করা হয়েছে। কোনওরকম ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে করা হয়নি। যাঁরা ভালো মানের পড়ুয়া, তাঁরা তো সহজেই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন। মাঝারি মানের ছাত্র-ছাত্রীদেরও বিশেষ অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
‘এতটাই ডিরেক্ট প্রশ্ন…’, মত অধ্যাপিকার
একইভাবে এসএকিউ অংশ থেকেও বেশিরভাগ ডিরেক্ট প্রশ্ন এসেছে বলে জানিয়েছেন তারকেশ্বর ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপিকা। উদাহরণ দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ওই অংশে একটি প্রশ্ন ছিল যে অ্যানইউপ্লয়েডি বলতে কী বোঝো। আবার একটি প্রশ্নে মিথজীবী নাইট্রোজেন সংবর্ধনকারী সায়ানোব্যাকটেরিয়ার নাম জানতে হয়। এগুলি এতটাই ডিরেক্ট প্রশ্ন যে সবধরনের ছাত্র-ছাত্রীরা উত্তর দিতে পারবেন।
বড় প্রশ্ন কি ঘুরিয়ে ছিল? কঠিন হয়েছে?
ঠিক সেরকমভাবেই সবধরনের ছাত্র-ছাত্রীরা বড় প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন অধ্যাপিকা। তিনি বলেছেন, ‘বড় প্রশ্নও একেবারে সহজ এসেছে। এমন কোনও প্রশ্ন করা হয়নি, যেটা একটু জটিল বা কিছুটা কনসেপচুয়াল। নিউক্লিওটাইড ও নিউক্লিওসাইডের মধ্যে সম্পর্ক, রিক্যাপিচুলেশন থিওরি, হট ডাইল্যুট স্যুপ, হেটেরোসিস, ইউকিউবেশন পিরিয়ডের মতো যে প্রশ্নগুলি এসেছে; সেগুলি একদম নর্ম্যাল ও ডিরেক্ট প্রশ্ন। পড়ুয়াদের কনসেপ্ট যাচাই করার মতো প্রশ্ন তুলনামূলকভাবে কম এসেছে।’
পর্যাপ্ত বিকল্প ছিল, ঘুরিয়ে প্রশ্ন এলেও সমস্যা হয়নি
সার্বিকভাবে পুরো প্রশ্নপত্র মিলিয়ে গুটিকয়েক প্রশ্ন কিছুটা ঘুরিয়ে আছে। যা মেরেকেটে ১০ শতাংশের মতো। উদাহরণ দিয়ে অধ্যাপিকা জানিয়েছেন, ২.২ দাগের প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়েছে যে কোন প্রকার RNA-তে NODOC দেখা যায়। এরকম প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য একটু খুঁটিয়ে পড়তে হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের একটু ভাবতে হতে পারে।
তবে সেক্ষেত্রেও বিকল্প প্রশ্ন ছিল। আর সেগুলি যথেষ্ট সহজ ছিল বলে জানিয়েছেন অধ্যাপিকা। তিনি জানিয়েছেন, ২.১ দাগের প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয় যে স্পার্মিয়েশন বলতে কী বোঝায়। বাকি প্রশ্নগুলিও সহজ ছিল। ফলে যাঁরা RNA-র প্রশ্নের উত্তরটা জানতেন না, তাঁদের নম্বর কমে যাবে না। তাঁর কথায়, ‘কোনও একটা প্রশ্ন একটু ঘুরিয়ে এলেও সেটার বিকল্প (অথবা) হিসেবে যেগুলি দেওয়া হয়েছে, সেগুলির উত্তর খুব সহজেই দিতে পারবে ছাত্র-ছাত্রীরা।’