ইয়াসের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পরেই এবার অতিবৃষ্টির দাপটে কার্যত দিশেহারা সুন্দরবনের কৃষকরা। সুন্দরবনের গোসাবা, সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ এলাকায় নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়ে গিয়েছে বিস্তীর্ণ চাষের জমি। প্রচুর চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কী করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না কৃষকরা।
প্রশাসন সূত্রে খবর, হিঙ্গলগঞ্জে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয়। কিন্তু এবারে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে। অন্যদিকে সন্দেশখালির অবস্থাও প্রায় একই। সন্দেশখালি ২ ব্লকের সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হয়। তার মধ্যে মাত্র ১৪০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। অন্যদিকে গোসাবা যেখানে নোনা জল ঢোকেনি, সেখানে বীজতলা তৈরি করে চাষ করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অতিবৃষ্টির কারণে প্রচুর বীজতলা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় লবনতা ও মৃত্তিকা গবেষণা কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, যে সব ধান নোনা জল সহনশীল, সেই ধানের বীজ কৃষকদের দেওয়া হয়েছিল। কিন্ত অতিবৃষ্টির কারণে প্রচুর বীজতলা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কৃষি দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বীজতলা নষ্ট হয়ে গেলেও গোসাবায় দ্বিতীয়বারের জন্য বীজতলা করে ৭৫ শতাংশ জমিতে ধান চাষ করা সম্ভব হয়েছে।
শুধু ধান চাষ নয়, মাছ চাষের ক্ষেত্রেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জানা গিয়েছে, সুন্দরবনের আশেপাশের বাড়ির পুকুরগুলি অতিবৃষ্টির ফলে ডুবে গিয়েছে। ফলে মাছ চাষ করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে, কুমীরমারি, রূপমারি পঞ্চায়েত এলাকায় অনেক গ্রামেই এই ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে চিংড়ির চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে মাছ চাষে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে, যার আর্থিক মূল্য ২ কোটি টাকা।