লোকসভা ভোটের আগে ‘ভাগীরথিতে ভাসিয়ে দেব’ বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। তাঁর মন্তব্যকে হাতিয়ার করে গোটা দেশে প্রচার করেছে বিজেপি। ভোট মিটলেও নিজের মেজাজ বদলাতে রাজি নন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুঁ কবির। লোকসভা ভোটে নিজের বুথে বিপুল ভোটে পিছিয়ে থাকায় ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় দলের ব্লক সভাপতিকে ছাড়াই সভা করলেন তিনি। প্রশ্ন তুললেন, এরা আবার কীসের নেতা।
আরও পড়ুন - রোজভ্যালি কর্তা গৌতম কুন্ডুর জামিন, আমানতকারীরা কি টাকা ফেরত পাবেন?
পড়তে থাকুন - এবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেল মমতার সরকার, কারণটা কী?
শুক্রবার মুর্শিদাবাদের শক্তিপুরে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভা করেন হুমায়ুঁ। সেখানে দেখা যায়নি দলের স্থানীয় ব্লক সভাপতি গোলক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সভা শেষে এই নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে হুমায়ুঁ বলেন, ‘বরাবরই আমার স্বমহিমায় চলা অভ্যাস। কে এখানকার বিধয়ক, কে ব্লক সভাপতি আমি জানি না। এখানকার যে ব্লক সভাপতি তার ভোটের ফল দেখুন। বুথে খবর নেন। ৪১টা ভোট পেয়েছে। সে কীসের নেতা? সে কীসের ব্লক সভাপতি? সমাজে যাদের গুরুত্ব নেই তাদের নিয়ে কথা বলার কোনও অভিপ্রায় আমার নেই। আমি আমার মতো করে চলি। আমার স্টাইলে চলি। নেত্রীর নির্দেশকে মান্যতা দিই। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার সেনাপতি, এটাই শেষ কথা। কে এখানকার নেতা না কেতা, এই নিয়ে আমার কোনও কথা বলার দরকার নেই।’
গত লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এই শক্তিপুর এলাকাতেই এক সভায় হুমায়ুঁ বলেন, ‘২ ঘণ্টার মধ্যে যদি তোমাদের ভাগীরথিতে না ফেলতে পারি রাজনীতি থেকে সরে যাব। শক্তিপুর এলাকায় বসবাস করা বন্ধ করে দেব। তোমরা হাতির পাঁচ পা দেখেছো? কিন্তু যদি ভেবে থাকো, ৩০ শতাংশ লোক মুর্শিদাবাদ জেলায় আমরা ৭০ শতাংশ। এখানে রামনগরে তোমরা বেশি আছো বলে কাজিপাড়ার মসজিদ ভাঙবে? আর বাকি এলাকায় মুসলিম ভাইয়েরা হাত গুটিয়ে বসে থাকবে এটা কোনও দিন হবে না, বিজেপিকে আমি বলছি’।
আরও পড়ুন - রাতে নৌকায় ঘুমিয়ে থাকার সময় ভয়ঙ্কর কাণ্ড, মৎস্যজীবীকে টেনে নিয়ে গেল বাঘ
হুমায়ুঁর এই মন্তব্য নিয়ে দেশ জুড়ে ব্যাপক প্রচার শুরু করে বিজেপি। তাদের দাবি, এখানে হিন্দুদের ভাগীরথিতে ভাসিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন হুমায়ুঁ। হুমায়ুঁর মন্তব্যের প্রতিবাদ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোষে পড়েন বেলডাঙা ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রধান কার্তিক মহারাজ। তবে সেই মন্তব্যের জন্য হুমায়ুঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই বলে বলীয়ান হয়েই কি এবার হিন্দু ব্লক সভাপতিকে ছাড়াই বৈঠক করলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক? উঠছে প্রশ্ন।