স্ত্রীকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে খুনের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। স্মার্টফোন কিনেছিলেন স্ত্রী। তাতে স্বামীর সন্দেহ হয় তাঁর স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছেন। এই সন্দেহের বশেই ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্ত্রীকে খুনের চেষ্টা করলেন স্বামী। এই ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার মধ্যরাতে নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার লস্করপুর পেয়ারাবাগানে। স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার স্বামী রাজেশ ঝাঁ এবং ভাড়া করে আনা এক দুষ্কৃতী। পলাতক এখনও এক।
ঠিক কী ঘটেছে নরেন্দ্রপুরে? এই ঘটনায় আক্রান্ত স্ত্রীর বক্তব্য। শুক্রবার বেশি রাতে তাঁর স্বামী রোজকার মতো ঘরে ঢোকে এবং তাঁর কাছ থেকে চাবি নিয়ে গেটের তালা লাগাতে যান। গেটে তালা লাগাতে দেরি হচ্ছে দেখে গৃহবধূ দেখতে যান। তখনই একজন দুষ্কৃতী তাঁর মুখ চেপে ধরে। আর এক দুষ্কৃতী ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁর দিকে তেড়ে আসেন। চিৎকার করতে তাঁকে খাটে শুইয়ে প্রথমে শ্লীলতাহানি করা হয় এবং গলায় ধারালো অস্ত্রের কোপ মারা হয়। গৃহবধুর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ধরা পড়ার ভয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে দুই দুষ্কৃতী এবং গৃহবধূর স্বামী। কিন্তু একজন দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ও তল্লাশি চালিয়ে তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় খড়দহ থেকে আসা লোকাল ট্রেনের টিকিট। গৃহবধূর অভিযোগ, তাদের দু’জনেরই মুখ ঢাকা অবস্থায় ছিল। প্রতিবেশীরা ওই গৃহবধূকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। তার গলায় সাতটি সেলাই পড়ে। খবর দেওয়া হয় নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশকে। পুলিশ এসে পাকড়াও হওয়া এক দুষ্কৃতী এবং স্বামীকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই গৃহবধূর বয়ান অনুযায়ী, বিয়ের পর থেকেই তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত স্বামী রাজেশ ঝাঁ। কিন্তু সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সবকিছু মেনে নিতেন তিনি। এমনকী পাড়া প্রতিবেশীদের সঙ্গেও কথা বলতে দিত না স্বামী। মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেওয়া হতো না ওই গৃহবধূকে। সন্তানদের অনলাইনে পড়াশোনার জন্য একটি স্মার্টফোন কিনে দেওয়ার কথা স্বামীকে বলেন ওই গৃহবধূ। কিন্তু স্বামী কিনে দেননি। তখন নিজের জমানো টাকা থেকেই স্মার্টফোন কেনেন রুপা ঝাঁ। কিন্তু স্বামীর কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতেন ফোনটি। কিন্তু স্বামী স্ত্রীকে ফোন ব্যবহার করতে দেখে ফেলার পরেই এই খুনের চেষ্টা করা হয়। এখনও পলাতক রয়েছে এক দুষ্কৃতী। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। স্বামী রাজেশ ঝাঁ ও এক দুষ্কৃতীকে আজ বারুইপুর আদালতে তুলবে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ।